বাস, ট্রাক, রিকশা, ভ্যানে করে দলে দলে মুসল্লিরা আসছে ইজতেমা ময়দানে
স্টাফ রিপোর্টার, টঙ্গী : শিল্পাঞ্চল খ্যাত রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী এক সময়কার খরস্্েরাতা কহর দরিয়া (তুরাগ) নদীর তীরে সোনাবানের শহর টঙ্গীতে অবস্থিত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের সকল প্রস্তুতি শেষে আজ বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে আ’ম বয়ানের মাধ্যমে প্রথম পর্বের ৩ দিন ব্যাপী বিশ্ব তাবলীগ জামাতের মহা-সম্মেলন ৫১ তম বিশ্ব ইজতেমা শুরু হচ্ছে। তবে ইজতেমার মূল কর্মসূচী আগামীকাল শুক্রবার ফজরের আযানের পর শুরু হবে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মহা-সমাবেশ এ বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা থেকে লাখ লাখ মুসুল্লিরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ডাকা অনিদিষ্টকালের ধর্মঘটকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন যানবাহনে বিশেষ করে ট্রাক, বাস, অটো, সিএনজি, মোটর সাইকের, প্রাইভেটকার, ট্রেন, ভ্যান ও রিকশায় করে ইজতেমা ময়দানের নির্ধারিত খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন।
দেশী বিদেশী মুসুল্লিদের অধিকাংশ রাজধানী কাকরাইল মসজিদসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ এবং মাদ্রসায় অবস্থান নিয়ে তাবলিগী দাওয়াত শেষে আজ থেকে ময়দানের জেলা ও থানা ভিত্তিক স্ব-স্ব খিত্তায় এবং বিদেশী মেহমানরা বিদেশী মেহমানখানায় (কামরায়) এসে হাজির হবেন। গতকাল বুধবার ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, সরকারী বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন সেবা মূলক প্রতিস্টানের খুটিনাটি কাজ ছাড়া ইজতেমার সকল প্রস্তুতি সর্ম্পন্ন হয়েছে। এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা এলাকা থেকে গতকাল থেকে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, ট্রেন, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা টঙ্গীতে আসতে শুরু করেছে। ফলে লাখ লাখ মুসুল্লির পদভারে আর আল্লাহ আমিন, আল্লাহ আমিন ধ্বন্নিতে মুখরিত এখন শিল্পাঞ্চল খ্যাত টঙ্গীর কহর দরিয়া তুরাগ নদীর তীরসহ আশ-পাশের এলাকা। মুসুল্লিরা ইজতেমা ময়দানের নির্ধারিত প্যান্ডেলের জেলাওয়ারী খিত্তায় ১৫ থেকে ৮০ বছর উর্দ্ধ বয়সী ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা সুশৃংঙ্খল ভাবে এসে অবস্থান নিচ্ছেন। দেশী-বিদেশী শীর্ষ মুরুব্বীদের ৩ দিন ব্যাপী মুল্যবান বয়ান শেষে আগামী রোববার দুপুর ১২ টা থেকে ১ টার মধ্যে যোহরের নামাজের পূর্বে আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ৫১ তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। মাঝখানে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ১৬ জানুয়ারী থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা এবং ১৮ জানুয়ারী ২০১৫ ইং দ্বিতীয় পর্বের আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমা পরি-সমাপ্তি হবে।
এবারের বিশ্ব ইজতেমায় আবহাওয়া ও শৈতপ্রবাহ অনুকুলে থাকলে প্রতি পর্বে বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশের প্রায় ১৫/২০ হাজার বিদেশী মেহমান এবারের ইজতেমা ময়দানে অংশগ্রহণ করবেন। তবে এবোলা ভাইরাস আক্রান্ত ৫টি দেশ এবারের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন না ঃ- লাইবেরিয়া, নাইজেরিয়া, সিয়েরালিয়ন, গিনি ও মালি। এছাড়া বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্থানে যারা চিল্লায় ছিলেন তাদের বেশীর ভাগই ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশের পথে রয়েছেন। অন্যদিকে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে সড়ক পথে আসা প্রায় ৫ শতাধিক বিদেশী মেহমান বিশেষ করে ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইয়ামেনে, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড এর শীর্ষমুরব্বীসহ মুসল্লিরা বিএনপির ডাকা অবরোধের কারনে ভারত বাংলাদেশের শার্শা সীমান্তের চেকপোষ্টে আটকা পড়েছেন। তারা আগামী ২৩ ও ২৪ জানুয়ারির মধ্যে ইজতেমা ময়দানে তাদের জন্য নির্ধারিত তাঁবুতে অবস্থান নিবেন।
একটি বিশেষ সূত্র জানায়, এবার যেসব দেশের মুসল্লিরা ইজতেমায় যোগ দিচ্ছেন সেগুলো হচ্ছে, পাকিস্থান, ভারত, কাতার, দুবাই, ইরান, ব্রুনাই, নিউজিল্যান্ড, কলম্বিয়া, মালয়, মরিসাস, হল্যান্ড, ফিজি, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, ফান্স, জার্মান, কেনিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, তুর্কী, ইউকে, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফিলিপিন, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, আমেরিকা, ইন্দোনেশিয়া, ফৌজি, মালয়েশিয়া, মালে, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, চীন, তুরস্ক, ফিলিস্থিন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাম্বিয়া, শ্রীলংকা, রাশিয়া, চিলি, কম্বোডিয়া, ভেনিজুয়েলা, তিউনেশিয়া, ইতালি, সুইডেন, সৌদি আরব, জর্ডান, ওমান, আলজেরিয়া, সোমালিয়া, লেবানন, ইথিওপিয়া, মৌরিতানিয়া, জিবুতি, সুদান, মরক্কো, ইয়েমেন, ডেনমার্ক, সিরিয়া, চাদ, মিয়ানমার, ইংল্যান্ড, ইরাক, মিশর, নরওয়ে, মাদাগাস্কার, পানামা, সেনেগাল, তানজানিয়া, ত্রিনিদাদ, ক্যামেরুন, কমোরেস, কোরিয়া, বাহরাইন, ইরিত্রিয়া প্রভৃতি। বিদেশী মুসুল্লিসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ১৫/২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি এবং প্রতিটি আখেরী মোনাজাতে ২০/২৫ লাখ মুসুল্লি অংশ নিবেন বলে ধারণা করছেন ইজতেমা আয়োজক কমিটি এবং বিভিন্ন আইন-শৃংখলা বাহিনী।
ইজতেমায় প্রথম পর্বে খিত্তা ওয়ারী মুসল্লি¬দের অবস্থান হলো ঃ ইজতেমার প্রথম পর্বে ঢাকার উত্তর থেকে দেশের উত্তর ভাগ অংশগ্রহণ করবেন। এর মধ্যে ১নং খিত্তায় গাজীপুর-১, ২নং খিত্তায় গাজীপুর-২, ৩-১৩নং খিত্তায় ঢাকা-৩ থেকে (ঢাকা-১,২ বাদে) ১২, ১৪নং খিত্তায় সিরাজগঞ্জ, ১৫নং খিত্তায় নরসিংদী, ১৬নং খিত্তায় ফরিদপুর, ১৭নং রাজবাড়ী, ১৮নং খিত্তায় শরিয়তপুর, ১৯(১-২) খিত্তায় কিশোরগঞ্জ, ২০নং খিত্তায় নাটোর, ২১নং খিত্তায় শেরপুর, ২২ নং খিত্তায় দিনাজপুর, ২৩নং খিত্তায় হবিগঞ্জ, ২৪নং খিত্তায় রংপুর, ২৫নং খিত্তায় লালমনিরহাট, ২৬নং খিত্তায় গাইবান্ধা, ২৭নং খিত্তায় জয়পুরহাট, ২৮নং রাজশাহী, ২৯নং খিত্তায় সিলেট, ৩০নং খিত্তায় চাঁদপুর, ৩১ নং খিত্তায় ফেনী, ৩২ নং খিত্তায় চট্টগ্রাম, ৩৩ নং খিত্তায় বান্দারবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ৩৪ নং খিত্তায় বাগেরহাট, ৩৫ নং খিত্তায় নড়াইল, ৩৬ নং খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ৩৭ নং খিত্তায় যশোর, ৩৮ নং খিত্তায় ভোলা, ৩৯ নং খিত্তায় বরগুনা ও ৪০ নং খিত্তায় ঝালকাঠি জেলার মুসলি¬রা অবস্থান করবেন।
ইজতেমায় দ্বিতীয় পর্বে খিত্তা ওয়ারী মুসল্লিদের অবস্থান হবে ঃ
খিত্তা নং-১ (নারায়ণগঞ্জ-১), খিত্তা নং-২ (নারায়ণগঞ্জ-২), খিত্তা নং-৩ (ঢাকা-১, হালকা-৩০১-৩২৫), খিত্তা নং-৪ (ঢাকা-২, হালকা-৬০১-৬৩৯), খিত্তা নং-৫ (কক্সবাজার), খিত্তা নং-৬ (মানিকগঞ্জ), খিত্তা নং-৭ (পিরোজপুর), খিত্তা নং-৮ (পটুয়াখালী), খিত্তা নং ৯(১) (টাঙ্গাইল-ক), খিত্তা নং ৯(২) (টাঙ্গাইল-খ), খিত্তা নং-১০(১) (জামালপুর-ক), খিত্তা নং-১০(২) (জামালপুর-খ), খিত্তা নং-১১ (বরিশাল), খিত্তা নং ১২(নেত্রকোনা), খিত্তা নং-১৩ (কুমিল্লা), খিত্তা নং-১৪(মেহেরপুর), খিত্তা নং-১৫ (ঝিনাইদহ), খিত্তা নং-১৬ (ময়মনসিংহ-১), খিত্তা নং-১৭ (ময়মনসিংহ-২), খিত্তা নং-১৮ (ময়মনসিংহ-৩), খিত্তা নং-১৯ (লক্ষ্মীপুর), খিত্তা নং-২০ (বি.বাড়ীয়া), খিত্তা নং-২১(কুড়িগ্রাম), খিত্তা নং-২২ (নোয়াখালী), খিত্তা নং-২৩ (নীলফামারি), খিত্তা নং-২৪ (ঠাকুরগাঁও), খিত্তা নং-২৫(পঞ্চগড়), খিত্তা নং-২৬ (চাপাইনবাবগঞ্জ), খিত্তা নং-২৭ (বগুড়া), খিত্তা নং-২৮ (পাবনা), খিত্তা নং-২৯ (নওগাঁ), খিত্তা নং-৩০ (মুন্সিগঞ্জ-১), খিত্তা নং-৩১ (মুন্সিগঞ্জ-২), খিত্তা নং-৩২ (মাদারীপুর), খিত্তা নং-৩৩ (গোপালগঞ্জ), খিত্তা নং-৩৪ (সাতক্ষীরা), খিত্তা নং-৩৫ (মাগুরা), খিত্তা নং-৩৬ (খুলনা), খিত্তা নং-৩৭ (সুনামগঞ্জ), খিত্তা নং-৩৮ (মৌলভী বাজার), ৩৯ (কুষ্টিয়া)।
ইজতেমা ময়দানের বিভিন্ন সূত্রে আরো জানা যায়, এ বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে সুনামের সাথে পরিচিতি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। ক্রম-বর্ধমান মুসুল্লিদের কথা চিন্তা করে গত কয়েক বছর ধরে এক পর্বের বিশ্ব ইজতেমা দু’পর্বে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তারপরও মুসুল্লিদের স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না। এমতাবস্থায় এক শ্রেণীর দখলদার ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম দিকের প্রবেশ পথসহ উন্মুক্তস্থল দখল করে নিয়েছে। ইজতেমা আয়োজকদেও দাবী জনস্বার্থে র্যাংগস ভবন অপসারন করা হয়েছে। ময়দানের পূর্ব পাশের বাটা, হোন্ডা ও টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) কারখানার অব্যবহৃত জমি ছাড়াও তুরাগ নদীর পশ্চিম তীরে ইজতেমা ময়দানের ব্যবহারের জমি ও বিভিন্ন জনকে রাজউকের বরাদ্দ দেয়া জমিতে স্থাপনা ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ইজতেমা ময়দানের প্রবেশ পথ দখল করে ফেলেছে। ফলে এবার নদীর পশ্চিমে ভাসমান সেতু নির্মাণে সেনাবাহিনীর গাড়ি ও মুসুল্লিদের গাড়ি পার্কিংসহ মুসুল্লীদের প্রবেশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দেশ ও জাতির স্বার্থে এসব জমি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন মানীয় প্রধানমন্ত্রীসহ উর্দ্ধতন প্রশাসন কর্তৃপক্ষের কাছে।
একটি বিশেষ সুত্র জানা যায়, টঙ্গী শিল্পাঞ্চলে একাধিক এধরনের ভেজাল ও নকল জুস, তরল পানীয়সহ তেল, আচার, সেমাই, চানাচুর কারখানা রয়েছে। এসকল নকল ও ভেজালপন্য সামগ্রী তৈরি ও বিক্রয় রোধসহ বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এগিয়ে আসার মাধ্যমে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে রেখে এসব ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করার আহবান জানান ইজতেমা আয়োজক কমিটিসহ দেশের বোদ্ধা মহল।
এদিকে, যানজট নিরসণের দ্বায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সাজেন্টদের সহযোগীতায় ট্রাফিক পুলিশ বিশ্ব ইজতেমাকে উপলক্ষ্য করে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজী। একাধিক ট্রাক ও বাস চালকরা জানায়, ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টরা টঙ্গীর ষ্টেশন রোড, টঙ্গী বাজার, কামারপাড়া রোড, বোডবাজার, জয়দেবপুর চৌরাস্তা, কোনাবাড়ী ও সালনা এলাকায় কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় প্রকাশ্যে তাদের কাছ থেকে ১শ’ থেকে ৫শ’ পর্যন্ত টাকা নিচ্ছে অন্যথায় যানবাহন ধরে রেকার লাগিয়ে অযথা ৮শ থেকে ১৮শ কোন কোন ক্ষেত্রে তারও অধিক রেকার বিল বানিয়ে টাকা আদায় করছে। কোন গাড়ীর চালক টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার কাজপত্র রেখে দেয়া হচ্ছে অথবা ইজতেমা কাজে ব্যবহারের জন্য গাড়ী আটক করে রাখা হচ্ছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম.এ.মান্নান গতকাল সকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় জানান, এবারের ইজতেমায় মুসুল্লিদের সার্বিক দিক বিবেচনা করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নিম্মবর্ণিত বিভিন্ন উদ্যেগ গ্রহন করেছে এবং ইতিমধ্যে ইজতেমা আয়োজক কমিটির সহযোগীতায় এগুলোর যাবতীয় কাজ শেষ হয়েছে।
প্যান্ডেল নির্মাণ ঃ ইজতেমায় আগত মুসল্লি¬দের জন্য কহর দরিয়া তুরাগ নদীর তীরে ১৬০ একর জমির উপর চট ও লাইলনের কাপড় দিয়ে সুবিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। বিদেশী মেহমানদের জন্য এবারও ময়দানের উত্তর-পশ্চিম কোনে টিনের ছাউনি দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে থাকা-খাওয়াসহ সব ধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাস্তা মেরামত ঃ ইজতেমাস্থলে যাতায়াতের জন্য সড়ক ও জনপথের রাস্তাগুলো সংস্কার এবং ফুটওভার ব্রীজগুলো চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। রাস্তার দু-পাশে ফুটপাত উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তুরাগ নদীতে পল্টুন ব্রীজ নির্মাণ ঃ ইজতেমায় আগত মুসলি¬দের যাতায়াতের সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদীর উপর ৮টি ভাসমান পল্টুন সেতু নির্মাণ করেছেন।
বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও পোষ্টার অপসারণ ঃ ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের উভয়পাশের ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকা থেকে রাজনৈতিক ও ব্যাবসায়ীক পন্য ও ছবি সম্বলিত বিজ্ঞাপন বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও পোষ্টার অপসারণ করা হয়েছে।
ওযু গোসল ও খাবার পানি সরবরাহ ঃ ইজতেমায় আগত মুসলি¬দের ওযু, গোসল ও খাবারের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও টঙ্গী পৌরসভার উদ্যোগে প্রতিদিন ৩ কোটি লিটার সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও ডেকসো আলাদাভাবে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।
স্টাফ রিপোর্টার, টঙ্গী : শিল্পাঞ্চল খ্যাত রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী এক সময়কার খরস্্েরাতা কহর দরিয়া (তুরাগ) নদীর তীরে সোনাবানের শহর টঙ্গীতে অবস্থিত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের সকল প্রস্তুতি শেষে আজ বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে আ’ম বয়ানের মাধ্যমে প্রথম পর্বের ৩ দিন ব্যাপী বিশ্ব তাবলীগ জামাতের মহা-সম্মেলন ৫১ তম বিশ্ব ইজতেমা শুরু হচ্ছে। তবে ইজতেমার মূল কর্মসূচী আগামীকাল শুক্রবার ফজরের আযানের পর শুরু হবে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মহা-সমাবেশ এ বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা থেকে লাখ লাখ মুসুল্লিরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ডাকা অনিদিষ্টকালের ধর্মঘটকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন যানবাহনে বিশেষ করে ট্রাক, বাস, অটো, সিএনজি, মোটর সাইকের, প্রাইভেটকার, ট্রেন, ভ্যান ও রিকশায় করে ইজতেমা ময়দানের নির্ধারিত খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন।
দেশী বিদেশী মুসুল্লিদের অধিকাংশ রাজধানী কাকরাইল মসজিদসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ এবং মাদ্রসায় অবস্থান নিয়ে তাবলিগী দাওয়াত শেষে আজ থেকে ময়দানের জেলা ও থানা ভিত্তিক স্ব-স্ব খিত্তায় এবং বিদেশী মেহমানরা বিদেশী মেহমানখানায় (কামরায়) এসে হাজির হবেন। গতকাল বুধবার ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, সরকারী বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন সেবা মূলক প্রতিস্টানের খুটিনাটি কাজ ছাড়া ইজতেমার সকল প্রস্তুতি সর্ম্পন্ন হয়েছে। এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা এলাকা থেকে গতকাল থেকে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, ট্রেন, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা টঙ্গীতে আসতে শুরু করেছে। ফলে লাখ লাখ মুসুল্লির পদভারে আর আল্লাহ আমিন, আল্লাহ আমিন ধ্বন্নিতে মুখরিত এখন শিল্পাঞ্চল খ্যাত টঙ্গীর কহর দরিয়া তুরাগ নদীর তীরসহ আশ-পাশের এলাকা। মুসুল্লিরা ইজতেমা ময়দানের নির্ধারিত প্যান্ডেলের জেলাওয়ারী খিত্তায় ১৫ থেকে ৮০ বছর উর্দ্ধ বয়সী ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা সুশৃংঙ্খল ভাবে এসে অবস্থান নিচ্ছেন। দেশী-বিদেশী শীর্ষ মুরুব্বীদের ৩ দিন ব্যাপী মুল্যবান বয়ান শেষে আগামী রোববার দুপুর ১২ টা থেকে ১ টার মধ্যে যোহরের নামাজের পূর্বে আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ৫১ তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। মাঝখানে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ১৬ জানুয়ারী থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা এবং ১৮ জানুয়ারী ২০১৫ ইং দ্বিতীয় পর্বের আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমা পরি-সমাপ্তি হবে।
এবারের বিশ্ব ইজতেমায় আবহাওয়া ও শৈতপ্রবাহ অনুকুলে থাকলে প্রতি পর্বে বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশের প্রায় ১৫/২০ হাজার বিদেশী মেহমান এবারের ইজতেমা ময়দানে অংশগ্রহণ করবেন। তবে এবোলা ভাইরাস আক্রান্ত ৫টি দেশ এবারের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন না ঃ- লাইবেরিয়া, নাইজেরিয়া, সিয়েরালিয়ন, গিনি ও মালি। এছাড়া বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্থানে যারা চিল্লায় ছিলেন তাদের বেশীর ভাগই ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশের পথে রয়েছেন। অন্যদিকে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে সড়ক পথে আসা প্রায় ৫ শতাধিক বিদেশী মেহমান বিশেষ করে ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইয়ামেনে, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড এর শীর্ষমুরব্বীসহ মুসল্লিরা বিএনপির ডাকা অবরোধের কারনে ভারত বাংলাদেশের শার্শা সীমান্তের চেকপোষ্টে আটকা পড়েছেন। তারা আগামী ২৩ ও ২৪ জানুয়ারির মধ্যে ইজতেমা ময়দানে তাদের জন্য নির্ধারিত তাঁবুতে অবস্থান নিবেন।
একটি বিশেষ সূত্র জানায়, এবার যেসব দেশের মুসল্লিরা ইজতেমায় যোগ দিচ্ছেন সেগুলো হচ্ছে, পাকিস্থান, ভারত, কাতার, দুবাই, ইরান, ব্রুনাই, নিউজিল্যান্ড, কলম্বিয়া, মালয়, মরিসাস, হল্যান্ড, ফিজি, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, ফান্স, জার্মান, কেনিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, তুর্কী, ইউকে, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফিলিপিন, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, আমেরিকা, ইন্দোনেশিয়া, ফৌজি, মালয়েশিয়া, মালে, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, চীন, তুরস্ক, ফিলিস্থিন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাম্বিয়া, শ্রীলংকা, রাশিয়া, চিলি, কম্বোডিয়া, ভেনিজুয়েলা, তিউনেশিয়া, ইতালি, সুইডেন, সৌদি আরব, জর্ডান, ওমান, আলজেরিয়া, সোমালিয়া, লেবানন, ইথিওপিয়া, মৌরিতানিয়া, জিবুতি, সুদান, মরক্কো, ইয়েমেন, ডেনমার্ক, সিরিয়া, চাদ, মিয়ানমার, ইংল্যান্ড, ইরাক, মিশর, নরওয়ে, মাদাগাস্কার, পানামা, সেনেগাল, তানজানিয়া, ত্রিনিদাদ, ক্যামেরুন, কমোরেস, কোরিয়া, বাহরাইন, ইরিত্রিয়া প্রভৃতি। বিদেশী মুসুল্লিসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ১৫/২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি এবং প্রতিটি আখেরী মোনাজাতে ২০/২৫ লাখ মুসুল্লি অংশ নিবেন বলে ধারণা করছেন ইজতেমা আয়োজক কমিটি এবং বিভিন্ন আইন-শৃংখলা বাহিনী।
ইজতেমায় প্রথম পর্বে খিত্তা ওয়ারী মুসল্লি¬দের অবস্থান হলো ঃ ইজতেমার প্রথম পর্বে ঢাকার উত্তর থেকে দেশের উত্তর ভাগ অংশগ্রহণ করবেন। এর মধ্যে ১নং খিত্তায় গাজীপুর-১, ২নং খিত্তায় গাজীপুর-২, ৩-১৩নং খিত্তায় ঢাকা-৩ থেকে (ঢাকা-১,২ বাদে) ১২, ১৪নং খিত্তায় সিরাজগঞ্জ, ১৫নং খিত্তায় নরসিংদী, ১৬নং খিত্তায় ফরিদপুর, ১৭নং রাজবাড়ী, ১৮নং খিত্তায় শরিয়তপুর, ১৯(১-২) খিত্তায় কিশোরগঞ্জ, ২০নং খিত্তায় নাটোর, ২১নং খিত্তায় শেরপুর, ২২ নং খিত্তায় দিনাজপুর, ২৩নং খিত্তায় হবিগঞ্জ, ২৪নং খিত্তায় রংপুর, ২৫নং খিত্তায় লালমনিরহাট, ২৬নং খিত্তায় গাইবান্ধা, ২৭নং খিত্তায় জয়পুরহাট, ২৮নং রাজশাহী, ২৯নং খিত্তায় সিলেট, ৩০নং খিত্তায় চাঁদপুর, ৩১ নং খিত্তায় ফেনী, ৩২ নং খিত্তায় চট্টগ্রাম, ৩৩ নং খিত্তায় বান্দারবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ৩৪ নং খিত্তায় বাগেরহাট, ৩৫ নং খিত্তায় নড়াইল, ৩৬ নং খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ৩৭ নং খিত্তায় যশোর, ৩৮ নং খিত্তায় ভোলা, ৩৯ নং খিত্তায় বরগুনা ও ৪০ নং খিত্তায় ঝালকাঠি জেলার মুসলি¬রা অবস্থান করবেন।
ইজতেমায় দ্বিতীয় পর্বে খিত্তা ওয়ারী মুসল্লিদের অবস্থান হবে ঃ
খিত্তা নং-১ (নারায়ণগঞ্জ-১), খিত্তা নং-২ (নারায়ণগঞ্জ-২), খিত্তা নং-৩ (ঢাকা-১, হালকা-৩০১-৩২৫), খিত্তা নং-৪ (ঢাকা-২, হালকা-৬০১-৬৩৯), খিত্তা নং-৫ (কক্সবাজার), খিত্তা নং-৬ (মানিকগঞ্জ), খিত্তা নং-৭ (পিরোজপুর), খিত্তা নং-৮ (পটুয়াখালী), খিত্তা নং ৯(১) (টাঙ্গাইল-ক), খিত্তা নং ৯(২) (টাঙ্গাইল-খ), খিত্তা নং-১০(১) (জামালপুর-ক), খিত্তা নং-১০(২) (জামালপুর-খ), খিত্তা নং-১১ (বরিশাল), খিত্তা নং ১২(নেত্রকোনা), খিত্তা নং-১৩ (কুমিল্লা), খিত্তা নং-১৪(মেহেরপুর), খিত্তা নং-১৫ (ঝিনাইদহ), খিত্তা নং-১৬ (ময়মনসিংহ-১), খিত্তা নং-১৭ (ময়মনসিংহ-২), খিত্তা নং-১৮ (ময়মনসিংহ-৩), খিত্তা নং-১৯ (লক্ষ্মীপুর), খিত্তা নং-২০ (বি.বাড়ীয়া), খিত্তা নং-২১(কুড়িগ্রাম), খিত্তা নং-২২ (নোয়াখালী), খিত্তা নং-২৩ (নীলফামারি), খিত্তা নং-২৪ (ঠাকুরগাঁও), খিত্তা নং-২৫(পঞ্চগড়), খিত্তা নং-২৬ (চাপাইনবাবগঞ্জ), খিত্তা নং-২৭ (বগুড়া), খিত্তা নং-২৮ (পাবনা), খিত্তা নং-২৯ (নওগাঁ), খিত্তা নং-৩০ (মুন্সিগঞ্জ-১), খিত্তা নং-৩১ (মুন্সিগঞ্জ-২), খিত্তা নং-৩২ (মাদারীপুর), খিত্তা নং-৩৩ (গোপালগঞ্জ), খিত্তা নং-৩৪ (সাতক্ষীরা), খিত্তা নং-৩৫ (মাগুরা), খিত্তা নং-৩৬ (খুলনা), খিত্তা নং-৩৭ (সুনামগঞ্জ), খিত্তা নং-৩৮ (মৌলভী বাজার), ৩৯ (কুষ্টিয়া)।
ইজতেমা ময়দানের বিভিন্ন সূত্রে আরো জানা যায়, এ বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে সুনামের সাথে পরিচিতি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। ক্রম-বর্ধমান মুসুল্লিদের কথা চিন্তা করে গত কয়েক বছর ধরে এক পর্বের বিশ্ব ইজতেমা দু’পর্বে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তারপরও মুসুল্লিদের স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না। এমতাবস্থায় এক শ্রেণীর দখলদার ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম দিকের প্রবেশ পথসহ উন্মুক্তস্থল দখল করে নিয়েছে। ইজতেমা আয়োজকদেও দাবী জনস্বার্থে র্যাংগস ভবন অপসারন করা হয়েছে। ময়দানের পূর্ব পাশের বাটা, হোন্ডা ও টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) কারখানার অব্যবহৃত জমি ছাড়াও তুরাগ নদীর পশ্চিম তীরে ইজতেমা ময়দানের ব্যবহারের জমি ও বিভিন্ন জনকে রাজউকের বরাদ্দ দেয়া জমিতে স্থাপনা ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ইজতেমা ময়দানের প্রবেশ পথ দখল করে ফেলেছে। ফলে এবার নদীর পশ্চিমে ভাসমান সেতু নির্মাণে সেনাবাহিনীর গাড়ি ও মুসুল্লিদের গাড়ি পার্কিংসহ মুসুল্লীদের প্রবেশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দেশ ও জাতির স্বার্থে এসব জমি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন মানীয় প্রধানমন্ত্রীসহ উর্দ্ধতন প্রশাসন কর্তৃপক্ষের কাছে।
একটি বিশেষ সুত্র জানা যায়, টঙ্গী শিল্পাঞ্চলে একাধিক এধরনের ভেজাল ও নকল জুস, তরল পানীয়সহ তেল, আচার, সেমাই, চানাচুর কারখানা রয়েছে। এসকল নকল ও ভেজালপন্য সামগ্রী তৈরি ও বিক্রয় রোধসহ বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এগিয়ে আসার মাধ্যমে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে রেখে এসব ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করার আহবান জানান ইজতেমা আয়োজক কমিটিসহ দেশের বোদ্ধা মহল।
এদিকে, যানজট নিরসণের দ্বায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সাজেন্টদের সহযোগীতায় ট্রাফিক পুলিশ বিশ্ব ইজতেমাকে উপলক্ষ্য করে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজী। একাধিক ট্রাক ও বাস চালকরা জানায়, ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টরা টঙ্গীর ষ্টেশন রোড, টঙ্গী বাজার, কামারপাড়া রোড, বোডবাজার, জয়দেবপুর চৌরাস্তা, কোনাবাড়ী ও সালনা এলাকায় কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় প্রকাশ্যে তাদের কাছ থেকে ১শ’ থেকে ৫শ’ পর্যন্ত টাকা নিচ্ছে অন্যথায় যানবাহন ধরে রেকার লাগিয়ে অযথা ৮শ থেকে ১৮শ কোন কোন ক্ষেত্রে তারও অধিক রেকার বিল বানিয়ে টাকা আদায় করছে। কোন গাড়ীর চালক টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার কাজপত্র রেখে দেয়া হচ্ছে অথবা ইজতেমা কাজে ব্যবহারের জন্য গাড়ী আটক করে রাখা হচ্ছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম.এ.মান্নান গতকাল সকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় জানান, এবারের ইজতেমায় মুসুল্লিদের সার্বিক দিক বিবেচনা করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নিম্মবর্ণিত বিভিন্ন উদ্যেগ গ্রহন করেছে এবং ইতিমধ্যে ইজতেমা আয়োজক কমিটির সহযোগীতায় এগুলোর যাবতীয় কাজ শেষ হয়েছে।
প্যান্ডেল নির্মাণ ঃ ইজতেমায় আগত মুসল্লি¬দের জন্য কহর দরিয়া তুরাগ নদীর তীরে ১৬০ একর জমির উপর চট ও লাইলনের কাপড় দিয়ে সুবিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। বিদেশী মেহমানদের জন্য এবারও ময়দানের উত্তর-পশ্চিম কোনে টিনের ছাউনি দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে থাকা-খাওয়াসহ সব ধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাস্তা মেরামত ঃ ইজতেমাস্থলে যাতায়াতের জন্য সড়ক ও জনপথের রাস্তাগুলো সংস্কার এবং ফুটওভার ব্রীজগুলো চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। রাস্তার দু-পাশে ফুটপাত উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তুরাগ নদীতে পল্টুন ব্রীজ নির্মাণ ঃ ইজতেমায় আগত মুসলি¬দের যাতায়াতের সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদীর উপর ৮টি ভাসমান পল্টুন সেতু নির্মাণ করেছেন।
বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও পোষ্টার অপসারণ ঃ ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের উভয়পাশের ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকা থেকে রাজনৈতিক ও ব্যাবসায়ীক পন্য ও ছবি সম্বলিত বিজ্ঞাপন বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও পোষ্টার অপসারণ করা হয়েছে।
ওযু গোসল ও খাবার পানি সরবরাহ ঃ ইজতেমায় আগত মুসলি¬দের ওযু, গোসল ও খাবারের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও টঙ্গী পৌরসভার উদ্যোগে প্রতিদিন ৩ কোটি লিটার সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও ডেকসো আলাদাভাবে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।