শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার কতটা যুক্তি সঙ্গত

কি অদ্ভুত আমরা! কি অদ্ভুত আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র!

॥ এম.এ ফরিদ ॥
স্বাধীনতার ৪৪ বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো পরাজিত শক্তি আমাদের পিছু ছাড়েনি। ত্রিশ লাখ শহিদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানীর বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ি যুদ্ধের মাধ্যমে ৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিকাল ৪.৩১ মিনিটে হানাদার বাহিনী আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে ঘাতকরা বাধ্য হয় মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ৪৪টি বছর। অনেক আশা-ভরসা নিয়ে বাঙ্গালী জাতী পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিল। দীর্ঘ ৪৪ বছর পরও বাঙ্গালী জাতী মুক্তি পেয়েছে কি না তা নিয়ে এখনও হিসেব কষতে হচ্ছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় সামরিক শাসকরা অধিষ্ঠিত হয়। জেনারেল জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে এদেশে সামরিক শাসনের গোড়াপত্তন শুরু করে। জেনারেল জিয়া ক্ষমতা গ্রহনের পর রাজাকারদের পূনর্বাসন করার মধ্য দিয়ে এদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিলেন। জেনারেল জিয়া রাজাকারদের শুধু পূনর্বাসনই করেননি, তিনি রাজাকারের দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে এদেশে রাজনীতি করার পূর্ণ স্বাধীণতা দিয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটি রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বক্তব্য দিত। এর পরবর্তীতে বেগম জিয়া ও সাবেক সামরীক শাসক জেনারেল এরশাদও রাজাকারদের পূনর্বাসন কাজে নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছিলেন। একটা সময়ে বিএনপির সহযোগীতায় কুখ্যাত রাজাকাররা মন্ত্রিত্ব লাভ করে এবং পবিত্র জাতীয় পতাকাকে তাদের গাড়ীতে ব্যবহার করার মাধ্যমে লাখ শহিদের আত্মার সঙ্গে তামাশা করে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে রাজাকার, আল বদর, আল শামস্দের বিচারের ব্যবস্থা করেন। সরকার, যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগ রয়েছে তাদের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আদালত গঠন করেন। ইতোমধ্যে জামায়াতের প্রথম সারির নেতাদের বিরুদ্ধে মহামান্য ট্রাইব্যুনাল সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করেছেন এবং জামায়াত যে একটি সন্ত্রাসী দল সে বিষয়েও মহামান্য আদালত ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। জামায়াত একটি সন্ত্রাসী দল এ বিষয়ে কারো কোন দ্বিমত থাকার কথা নয়। তাহলে কেন এখনো যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াতের বিচার করা হচ্ছে না। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জামাতের কর্মকান্ড সম্পর্কে কি আমরা তাহলে ভুলে যেতে বসেছি। জাতীর জনকের সু-যোগ্য কণ্যা দেশ রতœ জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার যদি জামায়াতের বিচারের ব্যবস্থা না করতেন তাহলে আর কোন সরকার এদের বিচার করবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। লাখো শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে বলতে চাই এদেশে জামায়াতের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। ওরা হয়তো এখন রাজনৈতিক ভাবে কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছে কিন্তু সময় সুযোগ বুঝে আবার ওরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে না এমনটা ভাবা বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়। গত ১৬ই ডিসেম্বরে চট্রগ্রাম কলেজে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে আসার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে এমনটিই আভাস দিল জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির। কত বড় ধৃষ্টতা সম্পন্ন কাজ করেছে ওই ছাত্র শিবিরের কর্মীরা। এত বড় সাহস ওরা কি করে পেল। এদের পিছনে কোন অদৃশ্য শক্তি রয়েছে কি না সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা জরুরী বলে মনে করেন এদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি গুলো। হানাদার পাকিস্থানীদের দোসর হিসেবে খ্যাত এই রাজাকারের বাচ্ছাদের কারনেই স্বাধীনতার যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয়েছিল। ওদের কারনেই এত রক্ত, এত ইজ্জত আমাদের খোয়াতে হয়েছিল। আজকে আমরা অনেক পরিপক্ক। আজ আমাদের হারানোর কিছু নেই। আমরা ওই সকল নরপিশাচদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। মাঠে-ময়দানে যেখানেই ওদের পাওয়া যাক না কেন আমরা ওদের গণধোলাই এবং দিগম্বর করে ছেড়ে দিব। সরকারের কাছে একটাই প্রত্যাশা নরপিশাচদের বিচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসী দল হিসেবে জামায়াতের বিচারও করতে হবে। আইন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এদেশে জামাতের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। সরকার যদি জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হয় তবে আমরা নতুন প্রজন্মের একজন  যোদ্ধা হিসেবে আমরাই ওদের এদেশে নিষিদ্ধ ঘোষনা করব এবং তলপি-তলপা সহ পাকিস্থানে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হব। জয় বাংলা।