শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

স্মরণ: শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের পবিত্র স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি

আহসান উল্লাহ মাস্টার
॥ মোঃ মুজিবুর রহমান ॥       

মেহনতি মানুষ অতীতে কাজ করেছে, বর্তমানে করছে এবং অনাগত দিনগুলোতেও কাজ করবে। এঁরা কাজ করে চিরকাল।   সমাজকে অগ্রগতির ধারার মাধ্যমে চালু রেখেছে তাঁরাই । বির্নিমাণ করে সমাজকে ।  মেহনত করে বলেই তারা মেহনতি মানুষ। এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সভ্যতাকে মেহনতি মানুষই । আর সেই মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে কিংবদন্তীর মতো আমৃত্যু নেতৃত্ব দিয়েছেন শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার। বিনম্র চরিত্রের এই অসামান্য সংগ্রামী রাজনীতিক  কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি। দেশপ্রেম ছিল প্রশ্নাতীত, দৃষ্টি ছিল মহান, আত্মবিশ্বাস ছিল অটুট আর হৃদয় ছিল সংবেদনশীল। উদারতার দিক থেকে তেমনি উদার।   মেহনতি  মানুষের কাছের নেতা জননেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার সমাজ নিয়ে ভাবতেন। সেই ভাবনার একটা বড় অংশজুড়ে ছিল বাংলাদেশের মেহনতি মানুষ। এই মেহনতি মানুষ মাটি কাটে, ইট-পাথর ভাঙ্গে, দাঁড় টানে, খেতে খামারে, কলকারখানায় কাজ করে। মেহনতি মানুষের  অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর দুর্দমনীয় সাহস ও ভূমিকার কথা সকলের অন্তর ছুঁয়ে আছে। তাঁর স্মুতি সব মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় প্রজ্বলিত মশাল হয়ে জ্বলছে। আজ ৭ মে ২০১৫ , বৃহস্পতিবার, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের একাদশ শাহাদৎ বার্ষিকী। ১১ বছর আগে শ্রমজীবী ও পেশাজীবী মানুষের নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার ঘাতকচক্রের ব্রাশফায়ারে শহীদ হন। তাঁর জন্ম গাজীপুরের সাবেক পূবাইল ইউনিয়নের হায়দরাবাদ গ্রামে। জন্ম তারিখ ৯ নভেম্বর ১৯৫০ সাল। ছাত্রজীবনে তিনি সোচ্চার ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায়, সত্য প্রতিষ্ঠায় এবং সব আন্দোলনে। রেসকোর্স ময়দানে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বললেনÑ “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”, আহসান উল্লাহ মাস্টারের মতো হাজারো কর্মী তাঁদের নেতা বঙ্গবন্ধুর উপর সম্পূর্ণ আস্থা রেখে এগিয়ে গেলেন অবিসংবাদিত নেতার দেখানো পথে, ঐক্যবদ্ধ হলো বাঙালি জাতি। আহসান উল্লাহ মাস্টার জীবন বাজি রেখে দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য অবতীর্ণ হয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে।

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ব্যক্তি-সত্তার মধ্যে একজন সমাজদরদী মহান মানুষের চরিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। শিক্ষকতা জীবনের প্রথম দিকে তরুণ আহসান উল্লাহ মাস্টার শুধু যে শ্রম বিষয়ক ও শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন, তা নয় তাঁকে আমজনতার দরদী নেতার ভূমিকা পালন করতেও দেখা গেছে। শ্রমিকদের অভাব অভিযোগ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেনদরবার করা এবং তাদের স্বার্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টায় কোনদিনই তাঁকে পিছ পা হতে দেখা যায় নি। ধীরে ধীরে মেহনতি মানুষ তাদের এই দরদী নেতার এমন অন্ধ-অনুসারী হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল যে, তাঁর আহ্বানে দু-তিন ঘন্টার মধ্যে হাজার হাজার লোকের সমাবেশ হওয়ার বিচিত্র দৃশ্য অবাক-বিস্ময়ে ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুরের সবাই     বার বার প্রত্যক্ষ করেছে। শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার তাঁর অন্তরের দরদ দিয়ে আমজনতার ভাল-মন্দ খোঁজ খবর নিতেন ও তাঁদের নিয়ে ভাবতেন বলেই তাঁর কথায় মানুষ সাড়া না দিয়ে পারতেন না। আর এভাবেই তিনি শ্রমিক ও জনতার দরদী নেতা রূপে স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। সমাজের সকল স্তরের মানুষের সঙ্গেই সমভাবে তিনি মিশতে পারতেন। গরীব-দুঃখীদেরই একজন হয়ে সাধারণ মানুষের সমাজেও তিনি অকৃত্রিমভাবে মেলামেশা করতে পারতেন। বিপন্ন অভাবগ্রস্থ মানুষের জন্য তাঁর অন্তরে সঞ্চিত ছিল সীমাহীন সহানুভূতি ও দরদ; এই জন্যই দেখা গেছে যে, গরীব-দুঃখীদের সহযোগিতার বেলায় তিনি অকৃত্রিম বন্ধু। শ্রম বিষয়ক আন্দোলনে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা হলে, সেই মামলার আইনী লড়াইয়ের জন্য আইনজীবী নিয়োগ ও মামলা পরিচালনার জন্য তহবিল গঠনসহ বহুবিধ কর্মযজ্ঞের সাথে শহীদ আহসান উল্লাাহ মাস্টার পরিচিত হয়েছেন। ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানের নির্যাতিত ও ভোগান্তির শিকার শ্রমিকদের জন্য মামলা বিষয়ক আইনী লড়াইয়ের জন্য ছুটে যেতেন  তিনি নিজে। অসাধারণ বন্ধুপ্রীতি ও অনুগত জনের প্রতি গভীর সৌহার্দ ও অকৃত্রিম ভালবাসা ছিল শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের অন্যতম গুণ। যাকে একবার তিনি বন্ধু বলে গ্রহণ করেছেন, তার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে তিনি সর্বক্ষণ প্রস্তুত ছিলেন।  মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য দেশের আপামর জনসাধারণের মধ্যে রাজনৈতিক চিন্তাধারার জীবন জোয়ার সৃষ্টি এবং সেই সঙ্গে তাকে সুসংহত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার পথে তিনি ছিলেন- একজন মাঠের দক্ষ কর্মী । তিনি ছিলেন একজন দেশভক্ত প্রেমিক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণ ছিল তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের সঞ্চয় শুধু মানুষের ভালবাসা। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে আপোষ করেননি যে ব্যক্তিটি, যিনি মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো একজন মানুষ ও রাজনীতিবিদ। সেই ব্যক্তি প্রাণ হারালেন ঘাতকচক্রের হাতে। সেবার দ্বারা ও মহৎ কর্মের মাধ্যমে আলোর প্রদীপ হাতে নিয়ে যে মানুষটি অবদান রেখেছিলেন সংগ্রাম-আন্দোলনে, সে মানুষটি আজ চিরনিদ্রায় শায়িত। শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার প্রমাণ করেছেন মানুষকে ভালবাসলে, তাদের জন্য কাজ করলে ও জীবন উৎসর্গ করলে মানুষ ভালবাসায় তার প্রতিদান দেয়।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় নির্বাচনে যতবার প্রার্থী হয়েছেন আমাদের জনগণের নেতা শহীদ আহসান উল্লাাহ মাস্টার একটিবারের জন্য হারেননি। জিতেছেন বিপুল ভোটে। জয় করে নিয়েছেন গণ-মানুষের হৃদয় ও অকৃত্রিম ভালবাসা। ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার উপজেলা পদ্ধতি বিলোপ করে দেয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যানদের নিয়ে আহসান উল্লাহ মাস্টার দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এজন্য তিনি জেল, জুলুম এবং নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। উপজেলা বিলোপের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন। তাঁরই মামলার ফলে আদালত স্থানিক পর্যায়ের প্রশাসনিক স্তর বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ দির্দেশনা দিয়েছিল। এ নির্দেশনা আজ দেশে প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের বাস্তব ফল হিসেবে বিরাজ করছে। শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাস্তবায়ন, পেশাগত ও স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা এবং প্রবাসী শ্রমিকদের হয়রানী বন্ধ করার দাবী নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন প্রতিনিয়ত। দেশে যখন ত্রাস ও গ্রাসের রাজনীতির বলয় তৈরি হয়েছে তখনই শহীদ আহসান উল্লাাহ মাস্টারকে দেখা গিয়েছে টঙ্গীর রাজপথে এবং ঢাকার রাজপথে। তিনি ১৯৮৩ সাল, ১৯৮৪ সাল, ১৯৮৭ সাল, ১৯৮৮ সাল ও ১৯৯০ সাল, ১৯৯৫ সাল, ১৯৯৬ সালের রাজনৈতিক পটভূমিতে শ্রমজীবী নেতা হিসেবে যে ভূমিকা রেখেছিলেন তা গর্ব করার মতো।
২০০১ সালে শ্রমিক-কর্মচারীদের নিকট রাষ্ট্রায়ত্ত ০৯টি বস্ত্র শিল্পের মালিকানা হস্তান্তরের মাধ্যমে মিলগুলো বেসরকারীকরণে  যে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপনে যাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম বাস্তবে কাজে লেগেছে, তিনি হচ্ছেন শ্রমিকদের পরীক্ষিত নেতা আহসান উল্লাাহ মাস্টার এমপি। শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকারের প্রশ্নে কোনদিন আপোষ করেননি। শ্রমিক অসন্তোষ যেখানে দেখা দিয়েছে, সেখানেই নিজে ছুটে গিয়েছেন। শ্রমিক অসন্তোষের সময় খেয়াল রেখেছেন শ্রমিক কেউ অসন্তোষকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে নিজের ফয়দা হাসিল না করতে পারে।  তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করা, নারী শ্রমিক স্বার্থ সম্বলিত দাবী বাস্তবায়ন ও বাস্তবতার সঙ্গে সংগতি রেখে মজুরি ও বেতন-ভাতা নির্ধারণ করার জন্য দেশের নীতিনির্ধারণী মহলের সচেতনতা বৃদ্ধি করার কাজে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। গত শতকের আশির দশকে গঠিত শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের(স্কপ) লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার জন্য শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন। তিনি আই এল ও কনভেনশন ‘৮৭ ও ‘৯৮ এর ভিত্তিতে শ্রম আইন সংশোধনের দাবি করেছেন। 
শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার মানদ-ে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার আন্তর্জাতিক মর্যাদাসম্পন্ন  একজন শ্রমজীবী নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন দশের মধ্যে একক। তাঁকে মানুষ ভক্তি করতো, তিনিও মানুষকে ভক্তি করতেন। স্বাতন্ত্র্যে ও বৈশিষ্ট্যে আর দশজন থেকে তাঁকে পৃথক করা যায় এবং তিনি দীপ্যমান হয়ে উঠেন জ্যোতির্ময় সূর্যের মতো। সকলের প্রিয় শহীদ আহসান উল্লাাহ মাস্টার ছিলেন সর্বস্তরের মানুষের গভীর শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় সিক্ত অপ্রতিদ্বন্দ্বি সংগ্রামী মানুষ। দেশ ও মানুষের জন্য তিনি কাজ করেছেন এবং জীবন উৎসর্গ করেছেন। শহীদ আহসান উল্লাাহ মাস্টার বহুমুখী প্রতিভা ও যোগ্যতার অধিকারী ছিলেন। এ রকম ব্যক্তিকে বাংলার মাটিতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ২০০৪ সালের ৭ মে, শুক্রবার। দেশ হারায় স্রংগ্রামী মানুষকে, যিনি ছিলেন সহস্র তরুণের আদর্শ, যিনি ছিলেন জনকল্যাণমুখী চিন্তাধারার একজন রাজনীতিবিদ ও একজন মানুষ গড়ার কারিগর। বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাাহ মাস্টার একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময় মরেননি; যুদ্ধ করেন দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সেই পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে হত্যা করতে পারেনি। তাঁকে হত্যা করে স্বাধীন দেশের মাটিতে ঘাতকচক্র। অন্যদিকে তিনি যে অসুস্থ রাজনীতি ও অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সেই অসুস্থ রাজনীতির দূরীকরণ ও অপশক্তিকে সমাজ থেকে থেকে নির্মূল করা যায়নি। এদিকে তাঁর জ্যেষ্ঠ ছেলে  মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি  প্রতিষ্ঠা করেছেন শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার ফাউন্ডেশন। তাঁদের বাবার আদর্শ ও লক্ষ্য প্রতিষ্ঠা এবং সমাজের খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কিছু কার যায় কি-না Ñ এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক। সমাজকে বড় করে দেখতে হলে মানুষকে বড় করে দেখতে হবে আর সেই মানুষই বড় সম্মান করে আহসান উল্লাহকে তাঁর নামের সাথে একটি বিশেষণ জুড়ে দিয়েছিল ‘মাস্টার’ । এমনকি এখন  তা তাঁর নামের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে ’আহসান উল্লাহ মাস্টার।’ তাঁর পেশাপরিচয়  ও শিক্ষকতার আদর্শই তাঁর সমগ্র জীবনাচরণের  অঙ্কুর ও শেকড়কে ধারণ করেছিল। তাঁর সকল মানবিক গুণ, ধ্যান-পবিত্রতা, কর্তব্য-পরায়ণতা, দৃষ্টিভঙ্গির উদারতা, সাহসিকতা ও ন্যায়ের পাশে দাঁড়ানোর সমুদয় সত্যনিষ্ঠায় যর্থাথই হয়ে উঠেছিল তাঁর পরিচয় এবং সম্মানসূচক বিশেষণ। আজকের দিনে জানাতে চাই  সেই সম্মানসূচক বিশেষণে অধিকারী নির্মল সৎ ,  শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, মেহনতি  মানুষের  কাছের  নেতার  রক্তের ধারা বৃথা যাবে না।
আমরা  খুব  কাছ  থেকে দেখেছি, বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্বহৃদয় ও মস্তিষ্কের অসংখ্য গুণরাজীতে সমুজ্জ্বল  শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার লোভ ও লালসার ঊর্ধ্বে থেকে  মেহনতি মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের সংগ্রামী মনন ও আন্তরিক কর্মনিষ্ঠা ইতিহাসের উজ্জ্বলতায় বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জীবন সংগ্রামে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের অবদান কখনো বিস্মৃতির গর্ভে তলিয়ে যাবে না। তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর কর্মে ও আদর্শে সমুজ্জ্বল হয়ে । শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের  একাদশ শাহাদৎ বার্ষিকীতে তাঁর পবিত্র স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
 লেখক:
কলেজ শিক্ষক,  মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক  গবেষক এবং আর্কাইভস ৭১- এর প্রতিষ্ঠাতা