শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

জিসিসি’র মেয়র পদ থেকে এম. এ. মান্নানকে অপসারণে বাধা নেই

॥ এম.এ. ফরিদ ॥

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়র এম.এ. মান্নানের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। গাজীপুরবাসী অনেক আশা-ভরসা নিয়ে এম.এ. মান্নানকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছিল। মানুষ মনে করেছিল, তিনি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে অন্তত্যপক্ষে দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে জিসিসিকে প্রভাবমুক্ত রাখবেন। সিটি কর্পোরেশনে বসে তিনি দলীয় কোনো রাজনীতি করবেন না। দলমত নির্বিশেষে সবাই তাঁর নিকট সমানভাবে সেবা পাবে। কিন্তু আমরা কি দেখতে পেলাম। আমরা যে আশা-ভরসা নিয়ে তাকে নির্বাচিত করলাম তিনি তাঁর উল্টোটা করে আমাদের হতভম্ব করে দিলেন। আমরা আশাহত হয়ে বিষন্ন বদনে চেয়ে থাকলাম। নির্বাচিত হয়েই তিনি নিজেকে খোলস থেকে বের করে আনলেন। সিটি কর্পোরেশন অফিসে বসে দলীয় রাজনীতি শুরু করে দিলেন। মাসে যে দু-একবার তিনি অফিসে আসতেন সে সময়ে দলীয় চামুচদারা পরিবেষ্টিত অবস্থায় আমরা তাকে দেখতাম। আমার বা আপনার কথা শোনার সময় কোথায় তাঁর। তিনি যে নব্য সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং নতুন এ সিটিকে যে ঢেলে সাঁজাতে হবে নির্বাচিত হওয়ার পর সবকিছু বেমালুম ভুলে বসলেন আমাদের পরম পুজনীয় শ্রদ্ধেয় স্যার। যদিও নামের আগে অধ্যাপক পদটি তিনি ব্যবহার করে থাকেন। তবে কবে কোথায় অধ্যাপনা করেছেন তাঁর কোনো ছিটে ফোঁটা প্রমান আমরা খুঁজে পাইনি। বড় দুঃখ হয় যখন তাঁর অফিসে ডাল ব্যবসায়ীর ছবি সম্বলিত ফেষ্টুন দেখি। আদুরে বোনের জামাই বিখ্যাত ডাল ব্যবসায়ী মেয়রের অবর্তমানে মেয়রের ভূমিকা পালন করে থাকেন। জীবনে তিনি যা করেছেন তা বোধকরি গাজীপুরের সবাই অবগত আছেন। পুরানা কাষন্দি ঘেটে ঝাঁঝালো পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই না। মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি দলীয় কর্মকান্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেললেও পারতেন। কারণ মেয়র পদটি মানুষের সেবা করবার জন্য, শাসন-শোষন করার জন্য নয়। গত ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে কি এমন ঘটনা ঘটলো যে, তিনি হরতাল ডেকে বসলেন। আর হরতাল ডেকে তিনি তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সাংবাদিকদের বহনকারী গাড়িতেইবা কেন ভাংচুর চালালেন। এটা কি কোনো সভ্য জগতের মানুষের কাজ। সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তাছাড়া আমরা কি কারও শত্রু। আমরা কি কোনো দলের পারপাস সার্ভ করি। তবে কেন এত গাড়ি থাকতে বেঁছে বেঁছে আমাদের গাড়িতে হামলা করা হলো। আমাদের গাড়িতে হামলার প্রতিবাদে আমরা গাজীপুর জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের উদ্যোগে ওই দিন বিকেলে শহরের ১৯ চত্ত্বর মুক্ত মঞ্চে এক প্রতিবাদ সভা করি। সভায় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার অনেক সাংবাদিক বন্ধুগণ উপস্থিত ছিলেন। আমরা সবাই হতবাক হয়ে গেলাম। সাংবাদিক বহনকারী গাড়িতে হামলা করা হলো অথচ বিএনপি দলীয় কোনো দায়িত্বশীল নেতাকে সেদিন দুঃখ প্রকাশ করতে দেখলাম না। তাদের ভাবখানা এমন ছিল যে, কিছুই হয় নি। কারণ যারা পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করতে পারে তাদের দ্বারা সবই সম্ভব। ভালো কিছু আশা করাটা অরন্যের রোদন ছাড়া আর কিছুই নয়। গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা ( নং-১০৪, তাং- ২৭/১২/১৪) দায়ের করি। সে মামলার হুকুমের প্রধান আসামী করা হয় এম.এ. মান্নানকে। এ মামলাটির চার্জশিট সম্প্রতি হয়ে গেছে। আগামী ১২ মে চার্জশিটের শুনানীর জন্য বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিায়াল ম্যাজিষ্ট্রেট দিন ধার্য্য করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী যদি কোনো মেয়রের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল হয়ে যায় তবে সেই মেয়রকে সরকার বরখাস্ত করতে পারেন। সে বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন বলে আশা করি। কারণ বর্তমান সরকার কোনো অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দেয় না। তাছাড়া মেয়র এম.এ. মান্নানের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় বিশেষ আইনে (মামলা নং- ২৩, তাং- ০৫/০২/১৫) (মামলা নং-৫২, তাং- ০৯/১১/০৪) মামলা রয়েছে। বর্তমানে যেহুতু বিভিন্ন অপরাধে তিনি হাজতবাস করছেন তাই আমি মনেকরি বরখাস্ত করলে কোনো গুনাহ হবে না বরং ছোয়াব পাওয়া যাবে। হতভাগ্য মানুষগুলো ও ০৫ বছরের শিশুকে জঘন্য এই ব্যক্তিটির নির্দেশে পুঁড়ে মারা হয়েছে তাদের আতœারা শান্তি পাবে। পুঁড়ে মরে যাওয়া পরিবারগুলোর সদস্যরা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। কারণ একজন খারাপ ব্যক্তির শাস্তি নিশ্চিত করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। তাই বর্তমান সরকার প্রধানের নিকট এই নগন্ন, উপেক্ষিত, অবহেলিত পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে মিনতি জানাতে চাই, সরকার যেন জঘন্য প্রকৃতির ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো থেকে সরিয়ে দেয়।