শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

প্রিয় নেতা, প্রিয় ব্যক্তিত্ব সবার প্রিয় শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার এমপি


॥ এম.এ. ফরিদ ॥
মহান আল্লাহ এমন কিছু মানুষকে পৃথিবীতে পাঠান যারা জীবিত থাকতে মানুষের কাছে যেমন প্রিয়, মৃত্যুর পরও সমানভাবে বেঁচে থাকে সাধারন মানুষের মনের মণিকোঠায়। যারা আমাদের সমাজে চিরস্মরণীয় হয়ে উজ্জল নক্ষত্রের ন্যায় জ্বল জ্বল করে জলতে থাকেন। এমনি একজন স্মরণীয় ও পুজনীয় ব্যক্তি আমার প্রিয় নেতা ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার এমপি। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। মনে হতে পারে তিনি যোজন যোজন মাইল দুরত্বে অবস্থান করছেন কিন্তু আমার মনে হয় তিনি আমাদের খুব কাছেই আছেন। তিনি মারা যান নাই, তিনি শহীদ হয়েছেন। আর যারা শহীদ হন তাঁরা কখনও মরে না। শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার একজন জনপ্রিয় সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর সঙ্গে খুববেশি যে আমার সখ্যতা ছিল তা নয়। কিন্তু কিছু মানুষের অল্প সান্নিধ্য পেলেই মনে হয় কত পুরনো সে সম্পর্ক। মনে হবে তিনি কতইনা আপন। স্যারের সঙ্গে ৪/৫ বার মিশতে পেরেছি। আর কথা মাত্র বলেছি ২/৩ বার। সব মিলিয়ে কথা হয়েছে আমার এ জীবনে সময়ের হিসেবে যদি বলতে হয় তবে ৬০ মিনিটের মতো। প্রেম অন্তর থেকে আসে। এটা আর্টিভিশিয়াল কোনো বিষয় নয় যে, আপনি জোর করে প্রেমের ভাবকে উত্থাপন করতে পারবেন। আমি হলফ করে বলতে পারি আহ্সান উল্লাহ স্যারের সঙ্গে যদি কেউ একবার কথা বলে থাকেন তবে তিনি তাঁর প্রেমে পড়ে যাবেন। অর্থাৎ তাকে মন থেকে অবশ্যই ভালোবাসবেন। বিষয়টি সম্পূর্ণ স্বর্গীয়। যার ব্যাখ্যা করার মতো ভাষা আমার জানা নেই। আজ ৭ মে, স্যারের শাহাদৎ বার্ষিকী। স্যারের স্মৃতিকথা মনে পড়ায় ‘দু’ কলম লেখার কিঞ্চিৎ পরিমান সাহস বলেন আর স্পর্ধা বলেন দেখালাম। আমার মনে পড়ে তিনি কখনও আমাদের সাংবাদিকদের মধ্যে অনৈক্য চাইতেন না। তাই স্যার বেশ কয়েকবার আমাদের নিয়ে বসেছিলেন ঐক্যবদ্ধ করার জন্য। তারিখ মনে  নাই, তবে এটুকু মনে আছে আমার শ্রদ্ধাভাজন বড় ভাই কাজী আলিমুদ্দীন বুদ্দীন যখন রেড ক্রিসেন্ট এর সভাপতি ছিলেন তখন তাঁর অফিসে আহ্সান উল্লাহ স্যারসহ সকল সাংবাদিকদের নিয়ে আমরা বসেছিলাম। স্যারের কথার ফাঁকে আমাদের এক সাংবাদিক ভাই (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) কি যেন বলার চেষ্টা করেছিলেন। তখন স্যার ধমক দিয়ে তাকে বসিয়ে দেন। তিনি আদর করে, অধিকার খাঁটিয়ে সবাইকে এভাবেই কথা বলতেন। স্যার রাগ করলেও মনে হতো আমাদের আদর করছেন। স্যারের সাথে শেষ দেখা সেই বুদ্দীন ভাইয়ের গাজীপুর ক্লাবে। সময়, তারিখ, বছর মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে, গাজীপুর পৌরসভার নির্বাচন উপলক্ষে আমরা সেদিন অনেকেই সেখানে গিয়েছিলাম। গাজীপুরের মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার সেদিন নির্বাচন বিষয়ে সাংবাদিকদের মতবিনিময় করার জন্য আমাদের ডেকেছিলেন । গাজীপুর পৌরসভার নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন গাজীপুরের আর এক প্রিয় নেতা, পৌর পিতা গণমানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল আলহাজ্ব আকম মোজাম্মেল হক। তাঁর নির্বাচনে সেদিন স্যার যেভাবে পরিশ্রম করেছিলেন তা যারা সেদিন দেখেছেন তাঁরাই বলতে পারবেন। সেই সময়ে যখন আমরা ফিরে আসছিলাম তখন তিনি সাংবাদিকদের জিজ্ঞেস করলেন তোমরা যে কালকে নির্বাচনের জন্য সংবাদ সংগ্রহে বের হবে কি নিয়ে যাবে। তখন সবাই বললো, গাড়ি নিয়ে আমরা বের হবো। তখন তিনি অনেককে মজা করে বললেন আমার কাছে তো তেমন কোনো টাকা নেই, থাকলে তেলের টাকাটা তোদের দিতাম। এমন সরল কথা কেউ আজ আর বলে না। সদা হাস্যজ্জ্যল স্যারের মুখখানী আজও চোখের সামনে ভেসে উঠে। অন্যায়ের সঙ্গে তিনি কখনও আপোষ করেন নি। মানুষের পাশে থেকে তিনি সব সময় মানুষের সেবা করার চেষ্টা করেছেন। তাকে শত্রুরা সব সময় ভয় পেত। কারণ তিনি যে অন্যায়কে আশ্রয় প্রশ্রয় দিতেন না। এ জন্য ২০০৪ সালের ৭মে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা তাকে তাঁর নিজ বাড়ির সামনে গুলিকরে হত্যা করে। বিএনপি-জামায়াত জোট মনে করেছিল শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টারকে হত্যা করলেই বুঝি তাঁরা তাদের সকল অপকর্ম নির্বিঘেœ করতে পারবে। তাঁরা গাজীপুরকে নেতৃত্ব শূন্য করতে পারবে। গাজীপুরের মানুষের মন থেকে শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টারের নাম চিরতরে মুছে যাবে। আসলে ওরা বুঝতে পারে নাই। জীবিত আহ্সান উল্লাহ মাষ্টারের চেয়ে মৃত আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার আরো বেশি শক্তিশালী। শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার এমপির শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে তাই একটি কথাই বলতে চাই, আমরা যারা বেঁচে আছি তাঁরা যেন, স্যারের আদর্শকে আকড়ে ধরে বেঁচে থাকি। আমরা যেন তাঁর আদর্শকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। স্যারের শাহাদৎ বার্ষিকীর দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।