শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

রাজাকারদের নামের তালিকা প্রনয়ণ করুন



জামায়াতের বর্তমান আমির কে

॥ এম.এ. ফরিদ ॥

জামায়াত একটি বিতর্কীত সংগঠন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত সরাসরি আমাদের বিরোধীতা করেছিল। জামায়াতের তৎকালীন নেতারা এদেশের স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যায়িত করে পাকসেনাদের সঙ্গে একাতœ হয়ে মহাহত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। জামায়াত শুধু আমাদের বিরোধীতাই করে নাই, ওরা আমাদের দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানীও ঘটিয়েছিল। শান্তি কমিটি গঠন করার মাধ্যমে বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর জামায়াত এদেশের বুদ্ধিজীবিদের নামের তালিকা করে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা অর্জন করি আমাদের কাঙ্খিত স্বাধীনতা। স্বাধীনতার প্রধান স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলার মহানায়ক, কিংবদন্তীর মহা পরুষ, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমেই রাজাকারদের একটি নামের তালিকা প্রনয়ণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ভালো করেই জানতেন, রাজাকারদের নামের তালিকা প্রকাশ না করলে ওরা আবার লেবাস পরিবর্তন করে মুক্তিযোদ্ধাদের কাতারে ঢুকে পড়তে পারে। তাই তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকার পাশাপাশি রাজাকারদেরও একটি তালিকা করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে জেনারেল জিয়া রাজাকারদের নামের তালিকাটি নষ্ট করে ফেলে। শুধু তাই নয়, জিয়া স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের পুনর্বাসন করেছিলেন। শাহ্ আজিজকে প্রধানমন্ত্রীত্ব দিয়ে তিনি ৩০ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করেছিলেন। জিয়া স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতকেও অপমান করেছিলেন। জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করেন তাঁর পতিœ বেগম খালেদা জিয়াও। তিনি ক্ষমতায় এসে আরো একধাপ এগিয়ে যান। বেগম জিয়া নতুন করে রাজাকারদের একটি নামের তালিকা করে স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা রেখেছিলেন। সেই তালিকা অনুযায়ী বিএনপি সরকার রাজাকার, যুদ্ধাপরাধীদের সরকারিভাবে ভাতাও প্রদান করতেন। প্রয়োজন বোধে এদের অস্ত্রও সরবরাহ করা হতো এমনটি শোনা যায়, বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমগুলো থেকে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী, শান্তি বাহিনী ও রাজাকার বাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক পিটার আর ক্যান যা লিখেছেন তা নিন্মরূপঃ পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক লোকদের ওপর সেনাবাহিনীর আস্থা না থাকায় তাদের মাথার ওপর ছড়ি ঘোরানোর ক্ষমতা দিয়ে গঠন করা হয় শান্তি কমিটি। অবাঙালি-বিহারী এবং মুসলিম লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর মতো কিছু রক্ষণশীল ধর্ম ভিত্তিক ছোট রাজনৈতিক দলের লোকজনকে নিয়ে এ কমিটি গঠন করে সেনাবাহিনী। রাজাকার বাহিনীতে লোকজনকে বিক্রুট করার ক্ষমতা দিয়ে দেয়া হয় এদের। যারা সেনাবাহিনীর আদেশ পালন করে পাকিস্তানের আজ্ঞাবহ থাকবে। এরা বিভিন্ন এলাকার হিন্দু ও স্বাধীনতা পন্থীদের বাড়ি-ঘর, দোকাটপাট ও জমিজমা দখল করে তা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। সম্মানিত পাঠক আমরা সাংবাদিক পিটারের এ লেখা থেকে কি বুঝতে পারলাম? রাজাকার অর্থাৎ স্বাধীনতা বিরোধীরা আমাদের ওপর কি ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছিল। তাঁরা এদেশের স্বাধীনতা পন্থী বাঙালিদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে পুঁড়িয়ে ছাড়খার করে ফেলেছিল। বর্বর হানাদার পাকিস্তান বাহিনীর পক্ষে রাজাকাররা সরাসরি কাজ করেছিল। আজ আমরা কি দেখতে পাচ্ছি। ওই একই কায়দায় স্বাধীনতা বিরোধী চক্র আমাদের দেশের নিরীহ মানুষকে পুঁড়িয়ে মারছে। জামায়াত একটি সন্ত্রাসী দল এ মন্তব্য বিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আদালতের। এখন জামায়াতকে দিয়ে বিএনপি সারা দেশে সন্ত্রসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। জামায়াতকে মন্ত্রীত্ব দিয়ে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করেছিল। এখন জঙ্গিবাদকে উস্কে দিতে জামায়াতকে ব্যবহার করে দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার পৈশাচিক চক্রান্তে মেতে উঠেছে। বিএনপির মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে জামায়াতের নেতারা এখন বিচারের মুখোমুখি। অনেক নেতাই যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষি সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে অন্ত্যরীন রয়েছে। আবার অনেক নেতাই পর্দার অন্তরালে চলে গেছেন। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন দলটির অঘোষিত আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, জামায়াতের নেতারা গা ঢাকা দেয়ায় দলটি নেতিয়ে পড়েছে তাই বেগম খালেদা জিয়া দলটিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সফল হওয়ার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মধ্যেই পড়ে রয়েছে। ভবিষৎতে জানা যাবে কে কতটা সফল হবে বা হয়েছে। তবে নতুন প্রজন্মের একজন সদস্য হয়ে বর্তমান সরকারকে অনুরোধ জানাবো, মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন নামের তালিকা রয়েছে ঠিক তেমনি রাজাকারদেরও একটি নামের তালিকা প্রনয়ণ করা হোক। বর্তমানে রাজাকাররা কে কোথায় রয়েছে তাঁরও একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি প্রকাশ করার প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে নতুন প্রজন্ম এক সময় রাজাকারদের নাম ভুলে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এখন দেশ পরিচালনা করছে। তাই এই সরকারের পক্ষেই সম্ভব নির্ভুল একটি রাজাকারদের তালিকা আমাদের উপহার দেয়ার। তাই বর্তমান সরকারের নিকট সবিনয় অনুরোধ জানাবো রাজাকারদের একটি নামের তালিকা দ্রুত প্রনয়ণ করবার জন্য।