শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

ঘরবাড়ি মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর

গাজীপুরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা

স্টাফ রিপোর্টার : গাজীপুরের বনগ্রাম এলাকায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের হামলায় রক্ষা পায়নি শিশু ও নারীরাও। এসময় ভাঙচুর করা হয় কালী মন্দিরের বেশ কয়েকটি প্রতিমা। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার পর এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন ওই গ্রামের  অধিবাসিরা। সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মো: নুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো: হারুন অর রশিদ ও ও.সি খন্দকার রেজাউল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট মোঃ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর  এলাকার বনগ্রাম গ্রামের বেশির ভাগই হিন্দু ধর্মাবলম্বী নৃগোষ্ঠী। রোববার রাতে এ গ্রামেই হামলা চালায় পুলিশের তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রসী রফিক ও তার দলবল। এসময় সন্ত্রাসীরা বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে তছনছ করে প্রতিটি ঘরের আসবাবপত্র। লুট করে স্বর্ণালঙ্কার, টাকা পয়সাসহ বিভিন্ন মালামাল। সন্ত্রাসীদের হামলায় এসময় আহত হন নারী ও শিশুসহ অন্তত ৭জন। হামলাকারীরা হিন্দুদের কালীমন্দিরে হামলা করে বেশ কয়েকটি প্রতিমা ভাঙচুর করে। হামলা চলাকালে সন্ত্রাসীদের ভয়ে অনেক পরিবার আশ্রয় নেয় পাশ্ববর্তী বনজঙ্গলে। এ ঘটনায় এলাকায় বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। প্রশ্ন ওঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
এলাকাবাসির অভিযোগ, শীর্ষ সন্ত্রাসী রফিক ও তার দলবলের অত্যাচার ও নানা অপরাধের প্রতিবাদ করায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীরা মধ্যযুগীয় কায়দায় হামলা ও লুটপাট চালালেও সোমবার দুপুরের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছে এলাকার লোকজন।
এ ব্যাপারে বনগ্রাম গ্রামের পিযুষ বর্মন জানান, মাস খানেক আগে শীর্ষ সন্ত্রাসী রফিকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসি তাকে গ্রাম ছাড়া করে। এনিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ওই  সন্ত্রাসী ও তার দলের লোকজন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। এরই জেরে রোববার রাতে রফিকের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন লোক লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় গ্রামবাসির ওপর। এসময় সন্ত্রাসীরা অন্তত ২০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে। হামলাকারীরা নারী পুরুষ যেখানে যাকে পেয়েছে তাকেই মারধর করতে থাকে। হামলায় কফিল, সুরেশ, রুমানাসহ অন্তত ৭জন আহত হন। একই গ্রামের সুনিল, সুকেন, মাজেদা খাতুন, বিমল, প্রহলাদ, লালমোহন, নিরঞ্জন, মঙ্গল, শ্যামলের বাড়িসহ অন্তত ৫০টি বাড়িতে হামলা করে ঘরের আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রি ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। লুট করা হয় নগদ টাকাসহ বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার। নিরঞ্জন ও সুধীরের বাড়িতে হামলা করে দু’টি অটো বাইক ভাঙচুর করা হয়। তবে ভাঙচুরের বিষয়টি পুলিশকে জানালেও  সোমবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে গাজীপুর পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানান, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে ওই কর্মকর্তার দাবি, ওই গ্রামের বাসিন্দারা বাংলা মদ তৈরী ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে, আর শীর্ষ সন্ত্রাসী রফিকও মাদক কেনা বেচায় জড়িত। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়াসহ হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।