শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

কালিয়াকৈরে পাচার কারীদের প্রতারণার শিকার ৬ নির্মাণ শ্রমিক

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের দক্ষিন মৌচাক এলাকায় প্রতারণার শিকার হয়েছে ৬ নির্মান শ্রমিক। প্রতারনার স্বীকার শ্রমিকদের মধ্যে ৪জন পাচারকারীদের খপ্পরে পরে অবৈধ পথে বিদেশ গিয়ে নিঃস্ব হয়ে বাড়ী ফিরল। বাকী ২জনের পরিবার এখনো তাদের হদিস পায়নি।
ভুক্তভোগী,এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়,  উপজেলার দক্ষিন মৌচাক এলাকায় ১৯৯৩ ইং সালে জাতীয় নির্মান শ্রমিক লীগ ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ নির্মান সঞ্চয় প্রকল্প নামের একটি সমিতি গঠন করা হয় । যার রেজিনং ঢ-৩২৩৭। ওই এলাকার জনৈক মহর আলী সমিতির নামে পাশবই তৈরী করে বিভিন্ন এলাকার নির্মান শ্রমিকদের সদস্য বানিয়ে সঞ্চয় সংগ্রহ করতে থাকে। এছাড়া নিজের বাড়ীতে বয়স্ক ও শিশুদের জন্য বর্ণমালা ছিন্নমুল স্কুল তৈরী করেন। স্কুলের সভাপতি মহর আলী  এবং পরিচালক তার সঙ্গী কামাল মিয়া। ওই স্কুলের নাম ভাঙিয়ে তারা বিভিন্ন ভাবে আর্থিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে থাকে ।  মহর আলী বিদেশে বেশি বেতনের চাকুরি পাওয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে সাইফুল ইসলাম, ছানোয়ার হোসেন, কাঠ মিস্ত্রি আশরাফুল ইসলাম স্বপন, শ্রমিক আব্দুল হান্নান, সাদেক আলী, শামীম হোসেন কে অনুপ্রানীত করে। বিদেশে যাওয়ার জন্য তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। পরে চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারী দালাল কামাল মিয়া অবৈধ পথে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কুড়িগ্রামের নেওশিবাজার এলাকায় পৌছিয়ে তাদের কাটাতারের বেড়ার নিচ দিয়ে পার হতে বলে। এ সময় তারা কাটাতারের বেড়া পেরিয়ে যেতে না চাইলে তাদের প্রাণনাশসহ নানা ভয়ভীতি দেখায় কামাল। পরে  উপায় না পেয়ে নিশ্চিত মরন ভেবে কাটাতারের বেড়া পার হন তারা।  পরে তাদের ভারতের দিল্লির আতিকুর রহমান নামে এক ঠিকাদারের কাছে রেখে চলে আসেন কামাল মিয়া। ঠিকাদার আতিকুর রহমান তাদের একটি ইটভাটায় নিয়ে কাজ করতে বলেন। এসময় শ্রমিক সাইফুল ইসলাম বলেন আমাদের ইটভাটায় কাজ করার কথা বলে আনা হয়নি। আমরা এখানে কাজ করব না।  এসময় আতিকুর রহমান বলেন,আমার কাছে তোমাদের বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ইচ্ছা করলেই্ তোমরা এখান থেকে যেতে পারবে না। দেশে ফেরার জন্য তারা ব্যকুল হয়ে উঠে। এদিকে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়না তাদের। সেখানে অনেক কষ্টে দিনপার করতে থাকেন তারা। এর কয়েকদিন পর  ইটভাটার পক্ষ থেকে তাদের বলেন বাড়ীতে ফিরে যেতে চাইলে আমাদের টাকা দিতে হবে। পরে টাকার জন্য ইটভাটার লোকজনের মোবাইল দিয়ে বাড়ীর লোকজনের সাথে কথা বলেন তারা। এসময় তারা জানিয়ে দেন আমাদের মিথ্যা কথা বলে এখানে এনে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তোমরা কামাল ও মহরের কাছে গিয়ে বিষয়টি তাদের জানাও। এসময় পরিবারের লোকজন মহরের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানালেও তিনি বিষয়টি কর্ণপাত না করে উল্টো তাদের শ্বাসিয়ে দেয়। পরে অনেক দরকষাকশির পর বিকাশে ৬৮ হাজার টাকা দিলে তাদের মুক্ত করে দেয়। সেখান থেকে ২০ দিন পর কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে জীবন মরণ ত্যাগ করে পরিবারের কাছে ফিরতে সেই কাটাতারের বেড়া অতিক্রম করে সাইফুল ইসলাম,আশরাফুল ইসলাম স্বপন,ছানোয়ার শামীম হোসেন ফিরতে পারলেও সাদেক আলী ফিরতে পারেনি।সাদেক আলী বেঁচে আছে না তাকে মেরে ফেলা হয়েছে জানে না তার পরিবার। এদিকে স্বামীর খোঁজ নিতে পাচারকারী কামাল,বাবুল ও জাহাঙ্গীরের বাড়ীতে গিয়েও কোন ফল পাচ্ছে না নিখোঁজ সাদেকের স্ত্রী। পরিবারের আয় উপার্জনের এক মাত্র অবলম্ভন স্বামী ফিরে না আসায় সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে স্ত্রী জিরিন।
সাদেক আলীর স্ত্রী জিরিন অভিযোগ করে বলেন, প্রতারক কামাল আমার স্বামীকে বিদেশে বেশি বেতনের কথা বলে নিয়ে গেছে। সবাই ফিরে এলেও আমার স্বামী এখনো ফিরে আসেনি। স্বামী ফিরে না আসায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছি। আমি প্রতারক মহর ও কামালের বিচার দাবি করছি। 
এঘটনায়  ভুক্তভোগীদের পক্ষে আশরাফুল ইসলাম স্বপন বাদী হয়ে মোঃ কামাল,জাহাঙ্গীর,বাবু ও মহর আলীকে আসামী করে কালিয়াকৈর থানায় রোববার একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এব্যপারে  মহর আলীর বলেন, আমি ঘটনা সর্ম্পকে জানিনা। জানার পর কামালকে আমার স্কুলের পরিচালক পদ থেকে বাদ দিয়েছি।
কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ওমর ফারুক বলেন, এঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।