শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র মানেনা এসিল্যান্ড- সেবাপ্রার্থীরা চরম হয়রানীতে

গাজীপুর সদর উপজেলা ভূমি অফিস

  মোঃ জহিরুল ইসলামঃ সদর উপজেলা ভূমি অফিসের এসিল্যান্ড মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অমান্য করে নামজারী ও জমাভাগ আবেদন নিষ্পত্তি করছেন। নানা অজুহাতে মাসের পর মাস হয়রানি করছেন আবেদনকারীদের। ফলে নামজারীতে দীর্ঘসূত্রীতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং চরম হয়রানীর শিকার হচেছ সেবাপ্রার্থীরা। ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। অফিসে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণীর এক কর্মচারী নেতা নামজারী জমাভাগ, মিস মোকদ্দমা, ডিসিআর প্রদানসহ যাবতীয় কাজ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঐ নেতা উমেদা নামধারী দালালদের নিয়ে সিন্ডিকেট করে নানা অনিয়ম, দূর্নীতি, ভূয়া নামজারীসহ ঘুষ বানিজ্যের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছেন অফিসটিকে।জানা যায়, অফিসটির অধীন সাতটি তহশিল রয়েছে। চলমান ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ঐ তহশিলগুলো থেকে প্রায় পনের হাজার নামজারী ও জমাভাগের আবেদন নিষ্পত্তির জন্য প্রেরিত হলেও গত দশ মাসে মাত্র ৮ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে বিনীতা রানী যোগদানের পর আবেদনপত্র অনুমোদন ও বাতিলের সঠিক পরিসংখ্যান সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। একটি সূত্র মতে এসিল্যান্ড পদে বিনীতা রানী যোগদানের পর প্রায় ৭ হাজার আবেদন বর্তমানে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। যার অধিকাংশই কয়েক মাস পূর্বে নিষ্পত্তি হওয়ার আইনগত বাধ্যবাধকতা ছিল। প্রতিদিন শত শত আবেদনকারী তাদের মূল দলিল, পর্চা, ওয়ারিশ সনদপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে টেবিল থেকে টেবিলে ঘুরে ঘুরে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। অথচ ভূমি মন্ত্রণালয় দূর্নীতি ও জনহয়রানী রোধে বিগত ৫ এপ্রিল, ২০১৪ইং তারিখে ভূঃম/শা-৯(বিবিধ)/১৩/০৯-৩৮৫নং পরিপত্রে নামজারী ও জমাভাগ আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সিরিয়াল বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করে। পরিপত্র জারীর পর কোন কোন জেলায় ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা দিলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা উপেক্ষিত হচ্ছে বলে মন্ত্রণালয়ের নজরে এলে পুনরায় ভূঃম/শা-৯/নামজারী-৬৭/১০-৮২৫নং পরিপত্র জারী  করে। এ পরিপত্রে নামজারী ও জমাভাগ নিষ্পত্তি ক্রমানুসারে করতে হবে এবং কোন অবস্থায় সিরিয়াল ভঙ্গ করা ও আদেশটির ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না মর্মে নির্দেশ প্রদান করা হয়। অথচ সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিনীতা রানী যোগদানের পর থেকেই এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিরিয়াল বজায় রেখে বা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের নির্দেশনানুযায়ী নামজারী আবেদন নিষ্পত্তি করেননি বলে ভূক্তভোগীগণ জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত আবেদনপত্র অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন এলাকার নামজারী আবেদন ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। শালনা তহসীলের ২৫২/১৪-১৫নং নামজারীর আবেদনকারী আবুল কাশেম কাশি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যে কোন আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে এমন কোন নজির আছে বলে মনে হয় না। তিনি আরো জানান, এসিল্যান্ড তার ঐ আবেদনটি দীর্ঘদিন পর্যালোচনার পর সার্র্ভেয়ারকে স্কেচ ম্যাপ সহ দখল প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। সার্ভেয়ার সরেজমিনে তদন্ত করে দখল প্রতিবেদন দেয়ার পর তিনি এসএ রেকর্ড থেকে আরএস রেকর্ডে কিভাবে মালিকানা স্বত্ব পরিবর্তন হলো তার কাগজপত্র চান। আরএস রেকর্ড নিয়ে কোন প্রশ্ন করার এখতিয়ার এসিল্যান্ডের না থাকলেও আমি তাকে যাবতীয় কাগজপত্র সরবরাহ করি। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নেতা শরীফের চাহিদা মাফিক ২ লক্ষ টাকা ঘুষ না দেয়ায় এসিল্যান্ড আবেদনটি বাতিল করেন। খ তপসিলভূক্ত অর্পিত সম্পত্তির এ আবেদনটি নিয়ে আমি প্রায় ৬ মাস এসিল্যান্ডসহ প্রত্যেকের ধারে ধারে ঘুরেছি। খ তপসিলভূক্ত অর্পিত সম্পত্তির নামজারী ও জমাভাগ আবেদনকারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক ভূক্তভোগী। মাসের পর মাস ধর্না দিতে হচ্ছে এসিল্যান্ডের কাছে। নানা অজুহাতে কালক্ষেপন করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত আবেদনপত্রে স্পষ্ট বলা রয়েছে নামজারী ও জমাভাগ হওয়ার পর জমি হস্তান্তর বা বিক্রয় হলে ক্রেতা নতুন করে নামজারীর আবেদন করলে (সরকারী স্বার্থ না থাকলে) পূর্বের কোন কাগজপত্র সংযোজনের প্রয়োজন নেই। কিন্ত এসিল্যান্ড বিনীতা রানী মন্ত্রণালয়ের আদেশ আমলে না নিয়ে ২০/২৫ বছরের মালিকানার ধারাবাহিকতার কাগজপত্র দেখতে চান। ব্যর্থ হলে আবেদনপত্র বাতিল করে দেন। যেমনটি হয়েছে বাসন তহশীলের ১৪-১৫ অর্থ বছরের ৫৯৯, ৫২৬নং আবেদনের ক্ষেত্রে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ অফিসের সাবেক কয়েকজন এসিল্যান্ড জানান, পূর্বের নামজারীকে অবমূল্যায়ণ করে সকল কাগজপত্র চাওয়া বিধিবর্হিভূত।