শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

কাপাসিয়ায় অবৈধ বালি উত্তোলণের মহোৎসব ঃ প্রাণ গেল শ্রমিকের

শাকিল হাসান, কাপাসিয়া : গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী দস্যু নারায়নপুর সড়কের পাশে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা বালি মহালে বালি উত্তোলণ কাজে ব্যবহৃত ড্রেজারের শাহীন (২২) নামে এক শ্রমিক পানিতে পড়ে ২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে মারা গেছে বলে জানা যায়। অস্বাভাবিক ভাবে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তড়িগড়ি করে লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত শ্রমিক বরগুনা জেলার কুমারখালি গ্রামের আঃ ছাত্তারের পুত্র।
জানা যায়, উপজেলার বাসটার্মিনাল এলাকার মাসুদ গংয়ের নিয়ন্ত্রনাধিন ভাড়া করা বিসমিল্লাহ বলগেটটি ২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ভোরে ইজারাদারের দায়িত্বপ্রাপ্ত নোমানের নির্দেশে মফিজ চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন  অবৈধভাবে বালি উত্তোলণ করছিল। এক পর্যায়ে ইঞ্জিন চালিত বালি ভর্তি বলগেট বিসমিল্লাহ-১ নদীতে আটকে যায়। বলগেটের বৈঠা ধরে থাকা শ্রমিক শাহীন হঠাৎ পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়। সাথে সাথে তাকে উদ্ধার করে জোবায়দা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিলে ডাক্তারা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানিয়েছে, সকাল ৭ টার দিকে বালি উত্তোলনের সময় বলগেটটি নদীতে আটকে গেলে নোমান ঘটনাস্থলে যায় এবং বৈঠা ধরে রাখা শাহীনকে বকাঝকা করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে নদীতে ফেলে দেয়। ফলে তার মৃত্যু ঘটে থাকতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। মাত্র ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে দরিদ্র শমিকের মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে জড়িতরা পালিয়ে গেছে বলে জানা যায়।   
 সরকারী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দীর্ঘ দিন যাবত কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলণ করে আসছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা শ্রীরুরের বরমী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বেপারী চলতি বছরের জন্য দেড় কোটি টাকায় ইজারার বরাদ্দ পান। নির্দিষ্ট ৫ টি স্থান ব্যাতিত অন্য কোন জায়গা থেকে বালি উত্তোলনের কথা না থাকলেও দায়িত্বে থাকা লোকজন প্রকাশ্যে তা করছে। এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে প্রশাসন মাঝে মধ্যে ২/১ টি ড্রেজার বা বলগেট আটক করলেও মামলা হয়না এবং পরে তা অজ্ঞাত কারনে ছেড়ে দেয়া হয়। নির্দিষ্ট স্থান থেকে নিয়ম মেনে বালি উত্তোলণ না করার কারনে ৩১ মার্চ মঙ্গলবার রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমান একটি ড্রেজার আটক করে থানায় সোর্পদ করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমান জানান, অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের অভিযোগে একটি ড্রেজার আটক করা হয়েছে, তবে মামলা হয়নি। সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে নির্মিত ময়মনসিংহ সড়কের কথা বলে যত্রতত্র ভাবে বালি উত্তোলণ করা হচ্ছে। অবৈধ বালি উত্তোলণ কালে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাটি সরেজমিনে তদন্ত করে দুষীদের বিরোদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। 
উল্লেখ, স্থানীয় শীতলক্ষ্যাা নদী তীরবর্তী পশ্চিম পাড়ের ঘন বসতি এলাকায় ব্যাঙ্গের ছাতার মত গড়ে উঠা প্রায় অর্ধশতাধিক বালি মহালের কারনে এলাকাবাসি অতিষ্ট। কাপাসিয়া-দস্যু নারায়নপুর সড়কের বালি মহাল গুলো থেকে বড় বড় ট্রাকে করে বালি পরিবহনের কারনে রাস্তায় খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সুস্ক মৌসুমে বালি বাতাসে উড়িয়ে এবং পানির সাথে আশপাশের ফসলের ক্ষেত সহ বাড়ি ঘরে ফেলার কারনে বসবাসের অযোগ্য ও পরিবেশ দূষণ মারাত্বক আকার ধারন করেছে। অতিষ্ট এলাকাবাসি কৃষকরা দীর্ঘ দিন যাবত স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তা বন্ধ করার দাবী জানালেও কোন কাজ হচ্ছে না বলে জানা যায়।