শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

কলাম

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন মুর্খ মানব ॥ নাশকতার জন্ম দাতা                           

 ॥ এম.এ. ফরিদ ॥

আমাদের দেশে অনেক জ্ঞানী লোকের বসবাস রয়েছে। যারা সমাজ, দেশ ও বাঙালি জাতিকে নিয়ে ভালো চিন্তা করে থাকেন। দেশের ক্রান্তিলগ্নে ওই সব জ্ঞানী ব্যক্তিগণ নিজেদের পান্ডিত্য জাহির করতে নানা অভিমত ব্যক্ত করে থাকেন। বিভিন্ন মিডিয়া এখন রাত ১২টার পর টক শো নামে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই সব পন্ডিত ব্যক্তিদের মতামতকে আমাদের মতো নাখান্দাদের সামনে প্রচার করে থাকে। আমরাও রাত জেগে ওনাদের কথা শুনে নিজেদের ধন্য মনে করে থাকি। তাঁদের কথাগুলো কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যে এটা যাচাই না করে নানা মন্তব্য করে দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করি। ওই সব টক শোর সুশীল বাবুরা মাঝে মধ্যে এমন কথা বলে থাকেন যা শুনলে আপনার চক্ষু কপালে উঠে যেতে পারে। আসলে সুশীল বাবুরা কি বলতে চান আর কি করতে চান তা তাঁরা নিজেরাও বোঝেন না। একটি কথা না বললেই নয়। সেটি হল ওই সকল জ্ঞানপাপীরাও জানেন না যে, তাঁরা কি বলছে। তাঁরা কেবল বলার জন্য বলে থাকেন। তাঁরা মনে করে এ দেশের মানুষ আপাদমস্তক বলদ। ওরা যা বলবে আমরা তাই বিশ্বাস করবো। যেমনটি ধরুন সম্প্রতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ বললেন, কিসের পরীক্ষা, কিসের কি? আগে আইনের শাসন দরকার। অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন এস.এস.সি পরীক্ষার মাঝেও তাঁদের দেশ উদ্ধারের কর্মসূচী তাঁরা অব্যাহত রাখবেন। তিনি কি বলেছেন তা তিনি নিজেও হয়তো অনুধাবন করে বলেন নি। আর যদি জেনে শুনেই বলে থাকেন তাহলে বুঝতে হবে তিনি ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪৩ জন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে তামাশা করছেন। তিনি তাঁদের ভবিষৎকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চাচ্ছেন। তাঁর মুর্খের মতো দেয়া এ বক্তব্যকে এ দেশের মানুষ কিভাবে গ্রহণ করবে তা একান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আমি তাঁকে মুর্খ মানব হিসেবে আখ্যায়িত করতে চাই। মুর্খ মানব না হলে কেউ কি পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলে। পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে ১৪/১৫ লাখ ছাত্র-ছাত্রীর ভাগ্যে কি ঘটবে তা কি হাফিজ সাহেব অনুধাবন করেছেন। নাকি ইতিমধ্যেও বিএনপি নেতারা যে বেফাস বক্তব্য দিয়ে দেশের মানুষের কাছে যেভাবে পচে গেছেন এটি তাঁরই পুনরাবৃত্তি। সেটি হলে কোনো দুঃখ থাকবে না। কিন্তু, এস.এস.সি পরীক্ষার সময় কোনো নাশকতা সৃষ্টি করলে তা দেশবাসী মেনে নিবে না। আমি তো ভেবে পাই না কি করে বিএনপির মতো একটি বৃহৎ সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান এমন অর্বাচিনের মতো বক্তব্য দিতে পারে। দেশে এমন কি ঘটনা ঘটেছে যে এস.এস.সি পরীক্ষার সময়ও হরতাল, অবরোধ ডাকতে হবে। আসলে বিএনপি নেত্রী চান না এদেশের মানুষ শিক্ষিত হোক। কারণ তিনি নিজে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে নাই এমন কি তার দু ছেলেও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই ম্যাডাম খালেদা জিয়া কখনই চান না এদেশের সাধারণ মানুষ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। কিন্তু প্রতিভাকে দাঁবিয়ে রাখা যায় না। প্রতিভা আপন মহিমায় ভাস্কর হয়ে ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবী জুড়ে। বিএনপি নেতারা মনে করেন যে কোনো মূল্যে তাঁরা ক্ষমতায় যাবেন। কারণ ক্ষমতায় গেলে লুটপাট করে সম্পদের পাহাড় গড়া যায়। এ জন্য প্রতিদিনই পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ অগ্নিদগ্ধ করে হত্যা করা হচ্ছে। যারা বেঁচে যাচ্ছেন তাঁরাও সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। এদের অন্যের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে হবে। কি বিভৎস ঘটনা। চোখ মেলে দেখা যায় না। যারা চিরজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করছে তাঁরা কি নিয়ে বেঁচে থাকবে তা নিয়ে বিএনপির কোনো মাথা ব্যাথা নেই। গত ৫ জানুয়ারি থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থানকে কেন্দ্র করে দেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। কেউ গনতন্ত্রের বিজয় আবার কেউ গনতন্ত্র হত্যা বলে গোটা দেশের জনগণকে জিম্মি করে ফেলে। আজ আমরা অবরোধের ২৮টি দিন অতিবাহিত করতে যাচ্ছি। এই ২৮টি দিনের পেছনের দিকে তাকালে আপনাদের কি মনে হবে। এটি কি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নাকি খালেদা জিয়ার পাকিস্তান। কোন দেশ মনে হবে আপনার। আমরা কি এটা চেয়েছি আমাদের দেশের দেশ প্রেমিক নেতা-নেত্রীদের কাছে। তবে কেন এমনটি করা হচ্ছে আমাদের সঙ্গে। আমাদের কি অপরাধ? কেন আজ আমার মা, বাবা, ভাই, বোন ও সন্তানকে পেট্রোল বোমা দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। কার স্বার্থে আমাদের ছেলেমেয়েদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। বেগম জিয়া একদিন আপনাকেও এ দেশের জনগণ কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে এবং এর জবাব আপনার নিকট থেকে আদায় করে ছাড়বে। তখন পাকিস্তানে পালানোর পথ খুজে পাবেন না। তাই আমি একজন ক্ষুদ্র মানুষ হয়ে আপনার নিকট সবিনয়ে অনুরোধ জানাতে চাই। আর আমাদের ভাগ্য নিয়ে তামাশা করবেন না। অবরোধের নামে সহিংসতা বন্ধ করুন। পেট্রোল বোমা মেরে মানুষকে পুঁড়িয়ে মারা বন্ধ করুন। মানুষকে জ্বালিয়ে কোন গণতন্ত্র চালু করবেন আপনি। দেশের সম্পদ নষ্ট করে আপনার পৈশাচিকতার বহিঃপ্রকাশ আর আমাদের দেখাবেন না। অনেক হয়েছে। যতেষ্ট হয়েছে। এস.এস.সি পরীক্ষার সময় অন্তত পক্ষে কোনো ধরনের হঠকারী কর্মসূচী ঘোষণা করবেন না। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আপনার কঠিন পাথরের মতো মনকে নরম করে দেন। আমিন।