শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

টঙ্গী ৫০ শয্যা হাসপাতালের হেড ক্লার্ক নাজমুলের বিরুদ্ধে ভুয়া বিল তৈরিসহ দূর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

স্বাস্থ্য সেবায় দুষ্ট চক্র

স্টাফ রিপোর্টার, টঙ্গী : টঙ্গী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোঃ মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী এবং গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) মোঃ আনিছুর রহমানের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত অসহায় দরিদ্র রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত নামে গন প্রজাতন্ত্রীক সরকারের  লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাট করছে হাসপাতালের হেড ক্লাক মোঃ নাজমুল। গাজীপুর সদর থানার অর্দাবাজ এলাকার বাসিন্দা হওয়ার সুবাধে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে গত ৩ প্রায় বছরে টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে চাকুরি করার নির্মিতে বিভিন্ন দূর্নীতির মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোিিট টাকার অর্থ-সম্পদের মালিক বনে গেছেন উক্ত হেড ক্লাক। গতকাল রোববার জাতীয় দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকা শেষ পৃষ্টায়  “ টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে রোগীদেও ওষুধ ও খাদ্য সরবরাহের নামে লাখ লাখ টাকা লুটপাট”  শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর উক্ত হাসপাতালের হেড ক্লাক মোঃ নাজমুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দূর্নীনির অভিযোগ করে ভুক্তভোগী হাসপাতালের র্নাস থেকে শুরু করে চর্তুথ শ্রেনীর (এমএলএসএস) পদে কর্মরত একাধিক কর্মচারী ও টঙ্গী, গাজীপুর সদর এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। 
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, টঙ্গী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী হাসপাতালের হেড ক্লাক মোঃ নাজমুল ১৯৮৮ সালে স্বাস্থ্য সহকারী পদ থেকে পদ পরিবর্তনের মাধ্যমে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে ফরিদপুর পযর্ন্ত কর্মজীবনে বিভিন্ন দূর্নীতিসহ অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের সাথে অসদাচরণের কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকারও হন একাধিকবার। গত প্রায় ৩ বছর পূর্বে একজন স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধিনস্থ সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের উচ্চমান সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আহাম্মদ আলী (হেড ক্লাক মোঃ নাজমুলের বড় ভাই) এর সহযোগীতায় টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে বদলী হয়ে আসেন। টঙ্গী আসার পর থেকে উক্ত হেড ক্লাক হয়ে উঠে বেপোরোয়া, টাকার নেশায় এহেন কোন কাজ নেই যা তিনি করছেন না।
বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্যমতে জানা যায়, হেড ক্লাক মোঃ নাজমুল মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোঃ মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী এবং গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) মোঃ আনিছুর রহমানের নাম ভাঙ্গানোসহ নিজ ও ট্রেজারী খরচ বাবদ কর্মচারীদের জন প্রতি বেতনের টাকা থেকে ১০০/২০০ শত টাকা, চিত্ত বিনোদনের টাকা থেকে ২০০০/৫০০০ হাজার টাকা, ডিপিএস লোন প্রদানের ক্ষেত্রে ৫০০০/১০০০০ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিল বাবদ ১০০০/১৫০০ হাজার টাকা, সরকারী বাসা বরাদ্ধ দেয়ার নামে ৫০০০/৮০০০ হাজার টাকা নেয়া, বদলীকৃতদের এলপিসি প্রদানের নামে ১০০০/২০০০ হাজার  টাকা ( টাকা না দিলে এলপিসি না দেয়া), জিবি ফান্ডের টাকা উত্তোলনের ১০০০০/১২০০০ হাজার টাকা, কর্মচারীদের বকেয়া বেতন উত্তোলনের ক্ষেত্রে অর্ধেক টাকা কেটে রাখা, ময়লা পরিস্কারে সিটি কর্পোরেশন ৫০ টাকা নিলেও হেড ক্লাক অতিরিক্ত আরো ১০০০ টাকা অগ্রিম নিয়ে থাকেন, টাকা না দিলে জেলা সিভিল সার্জনকে দিয়ে টঙ্গী হাসপাতালের বিভিন্ন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের বদলী করিয়ে দেয়া। পরবর্তীতে কর্মচারীরা বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বা স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি দ্বারা তদবীরের মাধ্যমে পুনরায় জেলায় বদলী হয়ে এলে তাদের জেলায় জয়েন্ট করিয়ে দিতে জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) এর নামে ২৫০০০/৩০০০০ হাজার টাকা আদায় করে তা আত্বসাৎ করা, বিভিন্ন মহিলা/পুরুষদের হাসপাতালে চাকুরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জেলা সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের টাকা দেয়ার নামে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে এক থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে হয়রানী বা আত্বসাৎ, প্রতি ইজতেমায় হাসপাতালে আগত ষ্টাফসহ বিভিন্ন কর্মচারী, কর্মকর্তা, ডাক্তারদের খরচসহ বছর ব্যাপী বিভিন্ন সেমিনার, কাগজপত্র ক্রয়, অফিস খরচের দ্বিগুন বিল ভাউচার তৈরি পূর্বক টাকা উত্তোলন ও আত্বসাৎ, হাসপাতালের কাপড়-ছাদর ধোলাইয়ের ক্ষেত্রে কন্ট্রাকটরের সাথে লিয়াজো করে দ্বিগুন বিল-ভাইচার তৈরি করে টাকা আত্বসাৎ করছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। আরো জানা যায়, ২০১৪ সালে বিশ্ব-ইজতেমার পর হেড ক্লাক  মোঃ নাজমুল এবং হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোঃ মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর যোগ সাজশে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী (এমএলএসএস) ছায়েদা, রেনু, নূরজাহান, সালাম ও আজগরকে বদলী করা হয়। পরবর্তীতে হেড ক্লক মোঃ নাজমুলের জন প্রতি ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে তাদের আবার টঙ্গীতে বহাল রাখা হয়। এবছর আবারো ছায়েদাকে নরসিংদীর পলাশ, জায়েদাকে নরসিংদীর মনোহরদী, আউয়ালকে রংপুর বদলী করা হয়। এবার ছায়েদা স্থানীয় এমপি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকা ডিবিশনের একজন পরিচালকের মাধ্যমে নরসিংদীর পলাশ থানা হাসপাতালের বদলী বাতিল করে গাজীপুর বদলী হয়ে আসলে তাকে গাজীপুর জয়েন্ট দেয়ার কথা বলে এবং সেক্ষেত্রে সিভিল সাজর্নকে রাজী করাতে ৩০ হাজার টাকা, জয়দেবপুর সদর থানার চৌরাস্তা এলাকার বাসিন্দা আশরাফ আলীর স্ত্রী চম্পাকে চাকুরি দেয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা হাতিয়ে হেড ক্লাক মোঃ নাজমুল। অপরদিকে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী (এমএলএসএস) দিরাশ্রম এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী ওরফে মঙ্গল মিয়া জনৈক রহিমাকে চাকুরি দেয়ার কথা বলে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোঃ মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ, জানা যায়, মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোঃ মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী টঙ্গী হাসপাতালে আসা বিভিন্ন রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের বদৌলতে উত্তরাস্থ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে সরকারী এ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়ে কমিশন খাওয়াসহ টঙ্গী হাসপাতালে সার্টিফিকেট বিক্রির জমজমাট ব্যাবসা পরিচালনা, ভর্তিকৃত রোগীদের খাবার পবিবেশনের দ্বায়িত্বে থাকা কন্ট্রকটর এবং কাপড় বা চাদর ধোলাই কন্ট্রাকটরের সাথে যোগসাজশে দ্বিগুন বিল ভাউচার তৈরি সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্বসাতের গুরতর অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে হেড ক্লাক নাজমুলের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উচ্চ কন্টে এ প্রতিনিধিকে বলেন, আপনি আমার নামে লিখেছেন, আমি মামলা করবো আপনাকে প্রমান দিতে হবে আমি কি দূর্নীনি করেছি। আমি সরকারের চাকুরি করি আমার উপরে আরো কর্মকর্তা রয়েছে পারলে তাদের বিরুদ্ধে লিখুন। ভুলত্রুটিতো থাকতেই পারে।
এব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোঃ মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।  
এবিষয়ে জানতে গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) মোঃ আনিছুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ডিজি অফিসে একটি মিটিংয়ে আছি আপনার সাথে পরে কথা হবে।
এব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকা বিভাগের পরিচালক প্রশাসন মোঃ নাসিমুল হকের মুঠো ফোনে যোগাযোগ তাকে পাওয়া যায়নি।