শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

কলাম

ওরা মানুষকে পুঁড়িয়ে মারছে আসুন আমরা কিছু জানোয়ার পুঁড়িয়ে মারি

॥ এম.এ. ফরিদ ॥

দেশব্যাপী বিএনপি জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকে অবরোধ-হরতাল চলছে। ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ-হরতাল কেমন চলছে বা জনগণের কেমন সাড়া মিলেছে যদি এ ধরনের প্রশ্ন কেউ করেন তবে বলবো সুপার-ডুপার ফ্লপ করেছে। কারণ এ দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ তাঁদের এ অবান্তর কর্মসূচী মেনে নিতে পারেননি। তাই মানুুষকে দেশের কোথাও অবরোধ কিংবা হরতাল পালন করতে দেখা যায় নি। সব কিছুই ঠিকঠাক ভাবেই চলছে। যে কারনে খালেদা জিয়া এদেশের শান্তি প্রিয় নীরিহ মানুষকে পুঁড়িয়ে মারছে। কারন যে কোন মূল্যে তিনি ক্ষমতায় যেতে চান। বাংলার জনগণকে তাঁর কোন প্রয়োজন নেই। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও এদেশের কতিপয় কুলঙ্গার মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যে ভাবে নীরিহ মানুষজনকে পুঁড়িয়ে মেরেছে ঠিক সেভাবেই খালেদা জিয়া ও তাঁর দোসররা এখন পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পুঁড়িয়ে মারছে। এসব নর-পিশাচদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মায়ের পেটে থাকা সন্তান, ২ বছরের শিশু এমনকি বৃদ্ধরাও। কি নির্মমভাবে একের পর এক নাশকতা করে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট চাচ্ছে পাকিস্তানের মতো আমাদের শান্তিপ্রিয় এদেশেও সহিংস ঘটনা সবসময় লেগে থাকুক। একের ভিতর পাঁচ বেগম খালেদা জিয়া সত্যিকার অর্থেই একজন ভালো নাট্যঅভিনেত্রী। তিনি তাঁর ছেলের লাশের সামনে বসে যেভাবে কান্নাকাটি করলেন তা দেখে অনেকের মন কেঁদেছে। অনেকে ভেবেছিলেন এবার বুঝি তিনি অন্য মায়েদের মতো সন্তান হারা মায়ের কষ্ট বুঝতে পারবেন। তিনি হয়তো আর নাশকতার পথে হাটবেন না। কিন্তু কুকুরের লেজ ১ যুগ ঘি মাখিয়ে পাইপে ঢুকিয়ে রাখলেই কি তা সোজা হয়ে যাবে। মোটেই না। লেজ থেকে পাইপ খুলে ফেললেই দেখবেন যেই সেই। সেটি আবার বাকা হয়ে যাবে। অবশ্য এখানে আর একটি উদাহরণ না দিয়ে পারছি না। সেটা হলো কুকুরকে ময়লা খেতে নিষেধ করে মুগুর দিলে সে বলে না আর ময়লা খাব না। কিন্তু কিছু সময় অতিবাহিত হতে না হতেই দেখবেন কুকুর আবার ময়লা খাওয়া শুরু করে দিবে। পরের কথাগুলো লিখে ওই দলের আতি-পাতি নেতাদের গাত্রদাহ করতে চাই না। আমি কি বোঝাতে চেয়েছি তা পাঠক নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন। দেখা গেল ছেলের লাশ দাফনের পর আমাদের সুযোগ্য বিএনপি নেত্রী পরের দিনই অবরোধের পাশাপাশি হরতাল ডেকে বসলেন। আসলে তিনি তো পুত্র শোকে কাঁদেননি। তিনি কেঁদেছেন যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির কথা চিন্তা করে। তিনি কেঁদেছেন কসাই কাদেরের কথা চিন্তা করে। তিনি কেঁদেছেন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। লজ্জা হয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের জন্য। যারা এমন একজন নেত্রীর নির্দেশে চলেন যিনি কি না একজন মা নন, তিনি হলেন একজন ডাইনী। কারন  দলের নেতা-কর্মীদের জন্য ওনার কোন মায়া নেই। দিনের পর দিন নেতাদের পিঠের চামড়া দিয়ে পুলিশ ডুগডুগি বাজাচ্ছে অথচ তিনি এসি রুমে বসে কাচ্চি বিরিয়ানী চিবোচ্ছেন। ত্যাগী এসব নেতাদের জন্য তাঁর কোন মাথা ব্যাথা নেই। দিনের পর দিন হরতাল-অবরোধ ডেকে তিনি শুধু দেশের বারোটাই বাজাচ্ছেন না, তিনি তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের ঘুমও হারাম করে দিয়েছেন। তারপরও যদি আন্দোলন সফল হতো তাতেও মানুষ সান্তনা খুজে পেত। মানুষ বলতে আমি কেবলমাত্র বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতা-কর্মীদের বোঝাতে চেয়েছি। কারন এদেশের সাধারণ মানুষের যদি এই অবরোধ হরতালে বিন্দুমাত্র সমর্থন থাকতো তাহলে তো আন্দোলন সফল হতো। কিন্তু  এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষ তাঁদের এ হঠকারী আন্দোলনের সাথে নেই। তাঁরা ঘৃণাভরে তাঁদের এ কর্মসূচী প্রত্যাখান করেছে। এ জন্য দলটি সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। পাকিস্তানী দোসরদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশকে শ্বম্মান বানানোর যে হীন চক্রান্তে মেতেছেন তা কখনই সম্ভব হবে না। ৩০ লাখ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এ স্বাধীনতা, দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের এ স্বাধীনতা, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এ স্বাধীনতাকে কেউ অপবিত্র করতে পারবে না। কোন দিনও তা সম্ভব নয়। ওরা যদি মনে করে দু-চার জেলায় পেট্রোল বোমা মেরে আন্দোলনের সার্থকতা খুজে পাবে তবে বোকার রাজ্যে বাস করার মতো মনে হবে। আসলেই তো বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া বোকার রাজ্যে বসবাস করছেন। তা না হলে কি কেউ অন্যের কাঁধে বন্দুক রেখে বাঘ শিকার করে। পাকিস্তানের সেই কুটনিতিককে নিয়ে তিনি এ দেশে যে ভাবে বোমা মারার সংস্কৃতি চালু করতে চেয়েছিলেন সেটাও ধরা পড়ে গেল গোয়েন্দাদের হাতে। সন্ত্রাসে অর্থায়নে যোগানদাতা কুলঙ্গার মাজহারকে সরকার বাক্স বন্দি করে পাকিস্তানে ব্যাকপাস করে দিয়েছে। এখন বেগম জিয়া আবার কোন ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করবেন তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে দেশবাসী। যার দেশের প্রতি মমত্ববোধ নেই। যিনি এ দেশের মানুষকে পুঁড়িয়ে মেরে পৈশাচিক হাসিতে বাতাস ভারী করে তোলেন, তাঁর মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। বাতাসে লাশের গন্ধ পাওয়া যায়। বাতাসে পোড়া মাংসের গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে। কি বিভৎস দৃশ্যগুলো। মানুষের কি করুন আর্তনাদ। সুস্থ্য কোন মানুষ স্থীর থাকতে পারবে না এ দৃশ্য দেখে। চোখ আপনা আপনি বন্ধ হয়ে আসে। চিন্তায় মাথা বেসামাল হয়ে আসছে। কি হবে ওই পরিবারের লোকগুলোর। কি নিয়ে বেঁচে থাকবে ওরা। ওদের ভবিষৎ কি? এমন অনেক প্রশ্ন এখন আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বর্তমানে আর একটি কঠিন সমস্যা দেখা দিয়েছে তা হলো এস.এস.সি পরীক্ষা। অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেল দেশের ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষৎ। এসব কচিমনের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে অতিতেও বেগম জিয়া নাটক করেছেন বর্তমানেও নাটক মঞ্চস্থ শুরু করে দিয়েছেন। জানি না কি হবে আমাদের এই ভবিষৎ কর্ণধারদের। কেউ যেন এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। সবাই যার যার অবস্থান থেকে কেবল কথার ফুলঝুড়ি আমাদের শোনাচ্ছেন। এতে করে কি সমস্যার সমাধান হবে। আমরা সাধারণ মানুষ সমাধান খুজে পেতে চাই। আমরা আর কাউকে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হতে দেখতে চাই না। আমরা শুধু শান্তি চাই। দায়িত্বশীল কর্তা ব্যক্তিরা কেবল আশ্বাসের বানী শুনিয়ে যাচ্ছেন। কার্যত কোন ফল আমরা পাচ্ছি না। শেষ হবে কবে নাশকতা ও সহিংসতার। এর সঠিক জবাব আমরা কার কাছে পাব তাও জানা নেই আমাদের। তবে বলতে পারি গত ১ মাসে বেগম জিয়া ৫৮ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছেন। যাদের মধ্যে সাধারণ মানুষ ৪৩ জন। বাকিরা রাজনৈতিক নেতা কর্মী। যানবাহনে আগুন ও ভাংচুর চালানো হয়েছে সহস্রাধিক। এখনও বার্ন ইউনিটে কাতরাচ্ছেন ১১১ জন দগ্ধ অসহায় মানুষ। আমরা প্রায় কয়েক শ হাজার কোটি টাকার লোকসানে পড়ে গেছি। এসব ক্ষতি পুরণ কত দিনে করা সম্ভব হবে তা কি বেগম খালেদা জিয়ার জানা আছে। তিনি কি চাচ্ছেন আমাদের দেশ আবারও পিছিয়ে যাক। তিনি আর কত মার বুক খালি করবেন। আর কত মানুষকে পুঁড়িয়ে মারলে তাঁর আতœা শান্তি পাবে। সরকারকে বলবো এসব বন্ধ করার জন্য জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। শুধু কথায় নয় কাজে প্রমাণ করুন আপনারা জনগণের পাশে আছেন। আর যদি না পারেন তাহলে আমরা যারা এদেশের সাধারণ জনগণ রয়েছি তাঁরা একদিন আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবো। যারা পেট্রোল বোমা মেরে আমাদের পুঁড়িয়ে মারছে ওরা পশু। আর পশু পুঁড়িয়ে মারার ঘটনা আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। ওরা যদি মানুষ মেরে জানোয়ার হতে পারে, তবে আমরা কেন ওই সকল জানোয়ারদের পুঁড়িয়ে মারতে পারবো না। তবে আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই এদের আইনগত ও সামাজিকভাবে প্রতিহত করতে হবে। আর যদি আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায় তবে আমরা বাধ্য হব ওদেরকেও পুঁড়িয়ে মারার জন্য। তখন হয়তো তাঁরা বুঝবে মানুষকে পুঁড়িয়ে মারা হলে কত কষ্ট হয়। প্রয়োজনে দু-চার জায়গায় এদেরকে ধরে পুঁড়িয়ে মারতে হবে। এতে করে পেট্রোল বোমা মারা অনেকাংশে কমে যাবে। দেশের বৃহত্তম স্বার্থে এধরনের অমানবিক কাজ করলে খুব একটা খারাপ হবে বলে আমি মনে করি না। অন্তত পক্ষে কিছু খারাপ লোক সমাজ থেকে কমে যাবে। আর যদি কোনোভাবেই বোমাবাজদের ধরা সম্ভব না হয় তবে বিএনপি-জামায়াত ও ২০ দলীয় জোটের কোনো না কোনো সদস্যকে অথবা নেতাকে ধরে হাতের কুনই পর্যন্ত পুুঁড়িয়ে দিতে হবে। তাহলেই পেট্রোল বোমা মারার প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হবে।