শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

কলাম

বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার মনের রাজনীতিক 


॥ এম.এ. ফরিদ ॥

রাজনীতির বিষয়টা বড় জটিল ও কুটিল। অনেকে বলে থাকেন যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তাদের মনে জটিলতা থাকে। নানা কুট বুদ্ধি তাদের মাথায় থাকে। তারা সর্বদা বিরোধীদের দমন-পিড়নের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। ক্ষমতায় যেতে রাজনৈতিক নেতারা বিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদের খুন পর্যন্ত করে থাকে। প্রতিপক্ষকে হেয় করার জন্য এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা রটিয়ে থাকে। যা রাজনীতির জন্য কখনই কল্যাণকর হতে পারে না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ভিন্ন মাত্রার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সমুদ্রের মতো বিশাল ছিল তার মন। বিরোধী হোক, সরকারী হোক কিংবা প্রতিপক্ষ হোক সবার প্রতি বঙ্গবন্ধু ছিলেন আন্তরিক । তিনি সবাইকে ভালোবাসতেন। কাউকে আঘাত করে কখনও কোন কথা বলতেন না। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে অনেক ঘটনা যা এখনও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। তার জীবনী থেকে অনেক ঘটনা আমরা জানতে পারি। যা আজও আমাদের জন্য শিক্ষনীয়। আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখতে পারি। এ জন্য আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি তার রাজনৈতিক দর্শন আমাদের আগামী দিনের পথ চলার কাজে আরো বেশি উৎসাহ যোগাবে। বঙ্গবন্ধুর উদারতা ও তার মন যে কত কোমল ছিল তার একটি উদাহরণ পাঠক সমাজে তুলে ধরতে চাই। বঙ্গবন্ধু ১৯৫১ সালের অক্টোবর মাসে মজলুম জননেতা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীসহ জেলে ছিলেন। সে সময়ে পাকিস্তানের রাওয়াল পিন্ডিতে একটি জনসভায় লিয়াকত আলী খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। লিয়াকত আলী খান নিজে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি সৃষ্টি করেছিলেন। তিনিই সেই ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন। ষড়যন্ত্র করে  খাজা নাজিমউদ্দিন গর্ভনর জেনারেলের পদ থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন আর গোলাম মোহাম্মদ অর্থমন্ত্রী ছিলেন তাকে করা হলো গর্ভনর জেনারেল। এই দুই শিষ্য লিয়াকত আলীর হত্যা কারীকে খুজে বের করা তো দুরের কথা, তারা ঘটনাকে ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছিল। আজ পর্যন্ত জাতি লিয়াকত আলীর খুনের ঘটনা জানতে পারেনি। প্রকাশ্যে দিবালোকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করা হলো, অথচ কেউ তা জানলো না। সেই সময়ে খুনিকেও গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছিল। ফলে লিয়াকত আলী হত্যার সঙ্গে জড়িত কুশিলবদের সর্ম্পকে জানা সম্ভব হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে এই লিয়াকত আলী ও নূরুল আমিনরাই ষড়যন্ত্র করে জেলে পাঠিয়েছিল। কিন্তু মহান রাব্বুল আলামিন একজন রয়েছেন। তিনি সব দেখেন। সময় মতো বিচার করেন। লিয়াকত আলীর মৃত্যুর ঘটনায় বঙ্গবন্ধু খুব দুঃখ পেয়েছিলেন। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বিশ্বাস করেন না। তিনি সব সময় ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে ঘৃণা করতেন। পাকিস্তানে যখন ষড়যন্ত্রের রাজনীতি চালু হয়েছিল তখন বঙ্গবন্ধু শংকিত ছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করা খুব বড় জঘন্য অপরাধ। বঙ্গবন্ধু সব সময় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করতেন। তিনি কখনই পিছনের দরজা কিংবা অসৎ উপায় অবলম্বন করে ক্ষমতায় যেতে চাইতেন না। তিনি সব সময় গণতন্ত্রের কথা বলতেন। জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিতেন। ভূখা-নাঙা মানুষদের কথা বলার জন্যই তাকে বহুবার জেল খাটতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ইচ্ছে করলেই পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর সঙ্গে আতাত করে শানসৈকতে জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন। অনেক লোভ তাকে দেখানো হতো। কোন লোভ-লালসা বঙ্গবন্ধুকে স্পর্শ করতে পারেনি। সারা জীবন বাঙালী জাতির মঙ্গলের কথা চিন্তা করেছেন। বাঙালীর অধিকার আদায়ের লক্ষে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। এটা তো ছোট্ট একটি ঘটনা তুলে ধরলাম মাত্র। এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যা প্রমাণ করেছে বঙ্গবন্ধু কত বিশাল মাপের ব্যক্তি। তিনি বাঙালী জাতিকে তার প্রসারিত বক্ষে আগলে রাখতেন। এখন আমরা কি দেখছি? আমাদের নেতারা এখন আমাদের কি শিক্ষা দিচ্ছে। আমরা তাদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করতে পারি না কেন? তারা কি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন না? আমরা বর্তমানে এমন একটি অবস্থায় রয়েছি, যে অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের উচিত হবে জাতির পিতার রাজনৈতিক দর্শন অনুসরণ করা। এখন দেশে জালাও-পোড়াও এর রাজনীতি চলছে। সাধারণ মানুষকে হত্যা করার মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার মহড়া চলছে। দেশের সম্পদ নষ্ট করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে। কাদের স্বার্থে এসব করা হচ্ছে। আমরা সাধারণ জনগণ এ ধরণের নেতাদের চাই না। আমরা চাই বঙ্গবন্ধুর মতো নেতার আদর্শে দেশ যারা চালাতে পারবে তাদের চাই আমরা। বঙ্গবন্ধুর মতো উদার মনের অধিকারী হতে বর্তমান রাজনীতিবীদদের অনুরোধ জানাচ্ছি। হিংসাতক রাজনীতি দেশের মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। তাই সরকার ও বিরোধী দলকে অনুরোধ জানাবো তারা যে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনকে অনুসরণ করে দেশের কাজে নিজেকে উৎস্বর্গ করেন। তবেই দেশের মঙ্গল হবে।