শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

কলাম

বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহবান

দেশ ও জাতির মঙ্গলের কথা চিন্তা করে নাশকতার পথ পরিহার করুন 

॥ এম.এ. ফরিদ ॥

গত ৫ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচী চলছে। অবরোধ কর্মসূচী চলাকালিন সময়ে সারাদেশে নাশকতাসহ পেট্রোল বোমা মেরে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অবরোধের নামে সারা দেশে জালাও পোড়াও শুরু করেছেন। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে ৭১এর পরাজিত শক্তি জামায়াত-শিবির। শিবিরের রগকাটা ক্যাডার বাহিনী চোরা গোপ্তা হামলা চালিয়ে যানবাহনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে। সারাদেশের পরিবহণ সেক্টরে নেমে এসেছে মহাসংকট। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে, পুড়িয়ে মেরে বেগম খালেদা জিয়া কী সুখ পাচ্ছেন? এসব অনাকাংঙ্খিত ঘটনা ঘটিয়ে কাদের তিনি খুশি করতে চাচ্ছেন? জাতি একদিন এসবের জবাব আদায় করে ছাড়বে। গত ১৩/১৪ দিনের অবরোধে ২৬ জনকে খালেদা গংরা পেট্রোল বোমা মেরে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। যাদের মধ্যে ১৯ জন সাধারণ মানুষ। এরা কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। সারা দেশে যানবাহন ভাংচুরসহ অগ্নিসংযোগ করা হয় ৫২০টি গাড়ীতে। রেলে নাশকতা করা হয় ৪ দফায়। কেন এমন সহিংসতার পথ বেছে নিলেন বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর পাকিস্তানী মদদপুষ্ট রাজাকাররা। তা জাতির কাছে স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের কারনে ক্ষমতা হারানো বিএনপি নামক দলটি যখন জনগণের নিকট থেকে প্রত্যাখাত হয় ঠিক তখনই এরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ক্ষমতা হারিয়ে বেগম জিয়া ও তার দু ছেলে নানা মামলায় জড়িয়ে পড়েন। অবশেষে রাজনীতি করবেন না মর্মে দু ছেলে গত জরুরী সরকারের নিকট মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। দলটির বেশির ভাগ নেতা কর্মীরা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ায় প্রায় সকলেই গা ডাকা দেয়। দলটি দেউলিয়া হয়ে যায়। ফলে দুটি নির্বাচনেই এ দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে দেশ ও মানুষের সেবা করার অনুমতি প্রদান করে। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বেসামাল হয়ে পড়ে। ফলে দলের অভ্যন্তরে ভাঙ্গনের সুুর বাজতে থাকে। হতাশা দেখা দেয় তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাঝে। অপরদিকে গত ৫ জানুয়ারি বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করে বিরাট ভুল করে বসে। পরবর্তীতে তাদের ঘুম ভাঙ্গে। তারা বুঝতে পারে নির্বাচনে না এসে তারা কত বড় ভুল করেছে। তাদের এ ভুলের জন্য একমাত্র দায়ী ব্যক্তিটি হলেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এখন তিনিই গো ধরে বসে আছেন। গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করতে না পেরে একটি বছর সুখ নিদ্রায় ছিলেন বেগম জিয়া। গত বছর নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি জোটের সহিংসতায় মারা যায় ৫০৭ জন। এদের মধ্যে ১৯৭ জন সাধারণ মানুষ। যাদের কেউই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। দেশি-বিদেশি অনেক জ্ঞানীগুনীর পদলেহন করেও নির্বাচন বানচালে ব্যর্থ বিএনপি এখন আবার ৫ জানুয়ারি থেকে ধ্বংসাতœক কর্মসূচী শুরু করেছে। বিএনপির মতো একটি বৃহৎ দল কী তবে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। জামায়াতের মতো একটি সন্ত্রাসী দলের সহযোগীতায় কেন তারা নাশকতার মতো পথ বেছে নিলেন। কেন তারা ভারতের বিজেপি’র সভাপতির টেলিফোনের মিথ্যা গল্প মানুষকে শুনালেন। এ সব গল্প শুনিয়ে মানুষকে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন? মানুষ এখন আর রূপ কথার ঠাকুরমার ঝুলির গল্প শুনতে চায় না। ডিজিটাল যুগের মানুষ আমরা। আপনি যদি একান্তভাবেই কোন গল্প আমাদের শুনাতে চান তবে দেশের জন্য আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? দেশ নিয়ে আপনি কি ভাবছেন? এসব আমাদের কাছে তুলে ধরুণ। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের প্রিয় এ জন্মভূমিকে পেয়েছি। নাশকতা করে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন না? আর কোন মায়ের কোল খালি করবেন না! সন্তান হারা মায়েদের অভিশাপে আপনি যেন সন্তান হারা না হন। আমি সেই চিন্তায় আছি। আপনার মনে কি কোন দয়ামায়া নেই। ক্ষমতায় যেতে আর কত লাশ আপনার দরকার তা জাতিকে স্পষ্ট করে বলুন। আল্লাহর ওয়াস্তে সহিংস কর্মসূচী বন্ধ করুণ। দেশ ও জাতির কথা ভেবে সুস্থ ধারার রাজনৈতিক কর্মসূচী দিন। যদি সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে না আসেন তবে জনগণ আপনাকে সারা জীবনের জন্য প্রত্যাখাত করবে। কাজেই সত্যিকার অর্থে যদি আপনার রাজনীতি জনগণের জন্য হয়ে থাকে তাহলে নাশকতার পথ পরিহার করে দেশের মঙ্গলের জন্য নিজেকে উৎস্বর্গ করুন। একটা সময় আসবে দেখবেন এ দেশের মানুষ আপনার ভালো কর্মগুলোর জন্য তাদের হৃদয়ে আপনাকে স্থান করে দিবে। সে সময় ক্ষমতায় যেতে আর আপনাকে গাড়ী ভাংচুর কিংবা পেট্রোল বোমা মেরে মানুষকে হত্যা করতে হবে না। মানুষের ভালোবাসা নিয়েই ক্ষমতায় যেতে পারবেন। তাই ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে অনুরোধ জানাবো নিজেকে আর নাশকতার পথে পরিচালিত করবেন না।