শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

কলাম

বিধি আমার এ দু চোখ অন্ধ করে দাও

॥ এম.এ. ফরিদ ॥
চোখ মানুষের অমূল্য সম্পদ। মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁর এ সুন্দর পৃথিবীকে মন ভরে দেখার জন্য প্রতিটি মানুষকে সুন্দর দুটি চোখ দান করেছেন। চোখ যে মানুষের কত মূল্যবান তা একমাত্র বুঝতে পারেন যার চোখ নেই। একজন অন্ধ ব্যক্তি কতটা অসহায় তা তিনিই বলতে পারবেন। চোখ যে মনের কথা বলে। চোখ নিয়ে রয়েছে অনেক গান, কবিতা। চোখের রয়েছে অনেক অনেক রং। নীল, লাল, কালো, ধূসর ক্যাটস আই ইত্যাদি। চোখ নিয়ে বর্ণনার শেষ নেই। প্রেমিক তাঁর প্রেমিকার চোখ নিয়ে অনেক পটানো কথা বলে থাকে, নীল নয়না আঁখি তোমার, ডাগর ডাগর চোখ যে তোমার, কাজল কালো আঁখি তোমার, টানা টানা চোখ যে তোমার আরো কত উপমা দিয়ে একজন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে তার হৃদয় জয় করার চেষ্টা করে। আসলে চোখের গুনাগুন বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। এ জন্য মহান আল্লাহ পাকের দরবারে লক্ষ কোটি শুকরিয়া আদায় করছি। কারণ তিনি আমার মতো একজন গুনাহগারকেও দুটি সুন্দর চোখ দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু এখন যা দেখছি তা খুব কষ্টের। আমার এ দুটি চোখ ভালো কিছু দেখার আশায় সব সময় উদগ্রীব হয়ে থাকে। সাধ জাগে ভালো কিছু দেখবার কিন্তু সাধ্য কোথায়, এখন যা দেখছি তা বর্ণনা করতেও ভয় হয়। শরীর শিউরে ওঠে। মাঝে মাঝে একা একা বসে ভাবি বিধাতা এসব দেখার জন্যই কি তুমি আমাকে এত সুন্দর চোখ দুটো দিয়েছিলে। আবার কখনও ভাবি বিধাতার দেয়া এ চোখ দুটো না থাকলে কি করে জঘন্য কাজগুলো দেখতাম। জ্বি পাঠক ঠিক ধরতে পেরেছেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কথাই বলছি। এখন দেশে যা ঘটেছে তা কোন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচী হতে পারে না। এগুলো শুধু সহিংসতা ও নাশকতা। এসব করে জনগণের মঙ্গল করা যায় না। জনগণের মঙ্গল চাইলে দেশে সুস্থ্য ধারার রাজনৈতিক কর্মসূচী দিতে হবে। রাজনীতিকে দূর্বৃত্তায়ানের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। এখন আমরা কি দেখছি। বাসে অগ্নি সংযোগ করা হচ্ছে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ি ভাংচুর করা হচ্ছে, পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, রেলের ফিসপ্লেট তুলে ফেলে নাশকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটা কোন ধরনের রাজনীতি। আজ আমরা অবরোধের ২১টি দিন অতিবাহিত করছি। এই ২১টি দিনে আমরা আমাদের এ দু চোখ দিয়ে কি দেখতে পেয়েছি। প্রিয় দেশবাসী আপনারা আপনাদের চোখ দিয়ে যা দেখছেন তা কি কখনও মেনে নিতে পারবেন। কি তরুণ তাজা ৩৩টি প্রাণ আমাদের দুটি চোখের সামনে আমরা দগ্ধ হতে দেখলাম। দেখা ছাড়া আমাদের কিইবা করার ছিল। এই ২১ দিনে সারা দেশে ৭২০টি যানবাহনে ভাংচুর  করাসহ অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে। নাশকতা কিংবা সহিংসতার একটা সীমা থাকা উচিত। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলের কর্মসূচী যেন চলমান একটি প্রক্রিয়া। কোনো কিছুই এদের কর্মসূচী থেকে রেহাই পাচ্ছে না। পরিবেশ পর্যন্ত বিপর্যয়ের মুখে, বিভিন্ন জেলায় রাস্তার পাশে গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে ভেবে উঠতে পারছি না, গাছগুলোর কি অপরাধ? তবে কি গাছগুলো আওয়ামী লীগ করে নাকি ওগুলো স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি। আমার নয়ন দুটি জঘন্য এসব দৃশ্য দেখে মাঝে মাঝে ছল ছল করে ওঠে। আপনা আপনি জ্বল গড়িয়ে পড়ে চোখ দুটো থেকে। অবশ্য অযথা কারও চোখ দিয়ে পানি আসে না। যখন দেখি আমার এ চোখ দুটির সামনে আমার দেশের নিরীহ লোকজনকে পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, অবুঝ কোলের শিশু এমনকি অন্তসত্বা মা তার পেটের ভিতরকার সন্তানটিকেও বাঁচাতে পারছে না তখন আমার এ দুটি চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়াটাইতো স্বাভাবিক ব্যাপার। যখন দেখি আমার এক বোন হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাঁদছে আর বলছে আমার বাচ্চাকে ফেরত চাই, আমার বাচ্চাকে ফেরত দিন তখন কি করে এ দুটি চোখ অস্ত্র“ সংবরণ করে রাখবে বলুন তো। এ চোখ আর এ সব দেখার ভার সইতে পারছে না। তাই অত্যান্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বলছি বিধি আমার দুচোখ অন্ধ করে দাও।