শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

গ্রেফতার বানিজ্য-তো আছেই, জিডি করতেও টাকা লাগে ১ হাজার

টঙ্গী মডেল থানার এসআই ও সেকেন্ড অফিসারের কান্ড

টঙ্গী থেকে মৃণাল চৌধুরী সৈকত : টঙ্গী মডেল থানার তিন এসআইর বিরুদ্ধে জিডি এট্রি, মামলা রেকর্ড ও মামলার তদন্তসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার পূর্বক মোটা অংকের টাকা আদায় ও টাকা না দিলে সাধারণ মানুষের সাথে অসৎ আচরণ করে থানা থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এএসই মালেকা বানু টঙ্গী মডেল থানায় ২০০৮ সালে টঙ্গী মডেল থানায় যোগদান করে দীর্ঘ ৭ বছর থাকার পর ২০১৫ সনের পদোন্নতী পেয়ে এসআই হয়ে পুনরায় টঙ্গী মডেল থানায় বদলী হয়ে আসেন। দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর একই থানায় থাকার সুবাধে এলাকার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যাবসায়ীদের সাথে গভীর সর্ম্পক গড়ে তুলেছে উক্ত মহিলা এসআই। এতে করে ৮ বছরে এসআই মালেকা গাজীপুরের সখীপুর, রাজধানীর উত্তরা ৪নং সেক্টরসহ আশপাশের এলাকায় বিপুল পরিমানে সম্পদ ক্রয় করেছেন বলেও একটি বিশেষ সুত্রে জানা যায়। এসআই মালেকাকে জেলা পুলিশ সুপার কয়েক দফা অন্য জেলায় বদলী করলেও অদৃশ্য এক শত্তির ইশারায় তার বদলী বাতিল হয়ে যায়। ৮ বছর একই থানায় থাকায় টঙ্গী থানার অন্য পুলিশ সদস্যদের মধ্যেও বিরুপ সমালোচনা শোনা যাচ্ছে। এরশাদ নগর (বাস্তহারা) এলাকার ব্যবসায়ী মো: চান ফকির অভিযোগ করে বলেন,  গতকাল বুধবার সকালে মারামারির একটি ঘটনায় অভিযোগ করতে আমি টঙ্গী থানায় যাই। এসময় ডিউটি অফিসার মালেকা বানুকে আমার সমস্যার কথা খুলে বলি অথচ এসআই মালেকা বানু আমার কথা না শোনে অন্যত্র মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকার অভিনয় করে। ২৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর আমার কাছে জিডি করা বাবদ এক হাজার টাকা দাবী করে। জিডি করতে টাকা লাগবে কেন জানতে চাইলে এসআই মালেকা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে জোর করে থানা থেকে বের করে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার এক অফিসার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ ৮ বছরে থানার ডিউটি অফিসার অন্য কেউ করতে পারে না। মালেকা বাহিরেও ডিউটি করে না এনিয়ে থানায় ব্যাপক আলোচনা হয় এবং অফিসার্স ইনচার্জকে কয়েক দফায় অভিযোগ করা হয়েছে তাতেও কোন লাভ হয়নি। স্থানীয় অপর একটি সূত্র জানায়, এসআই মালেকা টঙ্গীর আলোচিত দুই মাদক ব্যবসায়ীর ধর্ম বোন বলে পরিচয় দেন। এরা হলো ব্যাংকের মাঠ বস্তির মাদক স¤্রাজ্ঞী সাহাজানের মা, অর্ধশতাধীক মাদক মামলার আসামী দেওড়া ফকির মার্কেট এলাকার রাজিয়া। অভিযোগ রয়েছে মামলা রেকর্ডেে ক্ষেত্রেও এসআই মালেকা ২/৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। এছাড়াও তিনি থানা গেইটে বসিয়ে জিডি লেখানোসহ টাকা আদায়ের কাজটি অতি সুচারু ভাবে করিয়ে থাকে বৃদ্ধ নবী হোসেন, কনষ্টেবল জাফরকে দিয়ে। প্রায় দেখা যায়, জাফর ও নবী হোসেন দরিদ্র মানুষের জিডি লেখা ও এন্ট্রি করতে এসআই মালেকা ও এসআই সাজেদা লতা যখন যে ডিউটিতে থাকেন তাকে দেয়ার নামে ১ হাজার থেকে ২ হাজার কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ টাকা নিয়ে থাকেন। এছাড়াও টঙ্গী মডেল থানার অপর এসআই সাজেদা লতা, টঙ্গীতে এসেছেন প্রায় ৪ বছর। তিনি মামলা তদন্ত, জিডি এন্ট্রি, মামলা রেকর্ডেও ক্ষেত্রে টাকা ছাড়া কিছু বুঝেন না। টাকা না পেলে তিনি কোন কাজ করতে চান না বলেও অভিযোগ রয়েছে। টঙ্গী মডেল থানার একাধিক পুলিশ সদস্য জানান, এসআই সাজেদা লতা ৫শত টাকার নীচে জিডি, ২ হাজার টাকার নীচে মামলা রেকর্ড এবং মামলা তদন্তে গেলে ১০ হাজার টাকা না দিলে কোন কাজ করেন না।
অপরদিকে টঙ্গীর ষ্টেশন রোড এলাকায টঙ্গী কালীগঞ্জ রোডের দু’পাশে পরিত্যক্ত ফুটপাতে ফলের দোকান বসিয়ে নীরব চাঁদাবজী করার অপচেষ্টায় যুবলীগের ফারুক মিয়া ওরফে ফাইপ ফারুক গ্রুপ এবং শাহ-আলম গ্রুপের মধ্যে চরম বিরোধ লক্ষ্য করা গেছে, উক্ত বিরোধকে নিষ্পতি না কওে উল্টো মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে এবং আঞ্চলিক টানে ফারুক মিয়ার পক্ষকে স্থায়ী বন্দোবস্ত পূর্বক ফলপট্রি বসিয়ে চাঁদাবাজীতে প্রকাশ্যে সহায়তা করছে জেলা পুলিশ সুপারের ¯েœহধন্য হিসেবে পরিচয় দাতা টঙ্গী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোঃ হাসানুজ্জামান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় একাধিক ফুটপাত ব্যবসায়ীরা জানায়,  বিশ্ব ইজতেমা শেষ হতে না হতেই গত বুধবার ২২ জানুয়ারী রাতে ফারুক মিয়ার পক্ষ নিয়ে টঙ্গী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হাসানুজ্জামানের নির্দেশে পাইপ ফারুকের নেতৃত্বে এএসআই মানিক মাহমুদসহ একদল পুলিশ টঙ্গী কালীগঞ্জ রোডে টঙ্গী সরকারী হাসপাতালের গেইটের দোকানগুলো এক ঘন্টার মধ্যে উঠিয়ে নিতে হুমকি দিয়ে আসে এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এখানে ফলের দোকান বসানো হবে বলে জানিয়ে আসে। এছাড়াও টঙ্গী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার হাসানুজ্জামান নিজেকে এসপির লোক পরিচয়ে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত থেকে সপ্তাহ ও মাসোয়ারা নিয়ে থাকে। অপরদিকে নিজেকে বড় কর্তার লোক ভেবে থানার অফির্সাস ইনচার্জসহ কাউকে তুয়াক্কা করে না বলে একাধিক সুত্রে জানা যায়। গত কয়েক দিন পূর্বে এসআই মোজাম্মেল, এসআই আবু সিদ্দিক, এসআই মতিউর রহমান টঙ্গীর শফিউদ্দিন রোড থেকে বিএনপি সমর্থিত দুই কর্মীকে সন্দেহভাজন আটকের পর থানায় জমা দিলে উক্ত দুই কর্মীর পিসিপিআর যাচাই-বাচাই করে অফির্সাস ইনর্চাজ ছেড়ে দিলে থানার সেকেন্ড অফিসার হাসানুজ্জামান ক্ষিপ্ত হয়ে অফির্সাস ইনচার্জের বিরুদ্ধে অশালিন আচরণসহ গত ২১ জানুয়ারী টঙ্গী থানার এস আই আবু সিদ্দিকসহ একদল পুলিশ  মরকুন এলাকার বাসিন্দা ও টিএন্ডটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিএনপি কর্মী রতন মিয়াকে সন্দেহভাজন আটক কওে থানায় আনার পর স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ সরকার দলীয় নেতৃবৃন্দ স্থানীয় এমপির সুপারিশে রতনকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় এলে অফির্সাস ইনচার্জ রতনকে ছেড়ে দিতে কোন আপত্তি না করলেও থানার সেকেন্ড অফির্সাস তাদের কাছে ৬০ হাজার টাকা দাবী করে বলেন, টাকা দিলে তাকে ছাড়া যাবে নয়তো এসপির নির্দেশ আছে আদালতে পাঠানোর পরে অবশ্য এসপির নির্দেশে বিনা টাকায় তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হাসানুজ্জামান। এসব ঘটনায় ধারনা করা হচ্ছে টঙ্গী মডেল থানার চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে থানার কমান্ডিং ও সিনিয়র অফিসারদের পাশ কাটিয়ে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে এএসআই, এসআই থেকে শুরু করে সেকেন্ড অফিসার।
টঙ্গী মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ ইসমাইল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি।