শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

এবছর কেমন হলো প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা

স্টাফ রিপোর্টার, টঙ্গী : এবছর কেমন হলো বিশ্ব তাবলীগ জামাতের উদ্দ্যেগে অনুষ্টিত প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। গত ৯ জানুয়ারী থেকে রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে কহর দরিয়া (তুরাগ)তীরস্থ গড়ে ওঠা শিল্প শহর খ্যাত সোনাবানের টঙ্গী এলাকায় ১৬০ একর জায়গার উপর বিশালাকার ময়দানে ছামিয়ানা টাঙ্গিয়ে বিশ্ব মুসল্লিম সম্প্রদায়ের মহা-মিলন মেলা বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়ে গত ১১ জানুয়ারী-২০১৫ ইং আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।
বিশ্ব তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪র্থ বারের মতো প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্টিত হয়ে গেলো। আগামী দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা হবে ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
ফলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের যেমন দ্বি-গুন পরিশ্রম করতে হয়। ঠিক তেমনি স্বাস্থ্য সেবা, গ্যাস, বিদ্যুৎ,পানি,রেলওয়ে বিভাগ,বিআরটিএসহ বিভিন্ন পরিবহন সেক্টর এমনকি ইজতেমা কমিটিকেও দ্বিগুন কষ্ট পোহাতে হয় দুই পর্বে অনুষ্টিত বিশ্ব ইজতেমায়।
ইজতেমায় আগত দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লিদের দুর্ভোগ পুর্বের ন্যায় এবছর অনেকটাই ছিলো ইজতেমা প্রস্তুতি কমিটি ও আইনশৃংখলা বাহিনী বিভিন্ন দপ্তরের নিয়ন্ত্রনের মধ্যে।
তারপরও দুই পর্বে অনুষ্টিত বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, ইজতেমা ময়দানের পুর্বপাশ বাটা ফ্যাক্টরী ও আশরাফ টেক্্রটাইল মিলের পেছনে ওজু ও গোসলের পানিসহ টয়লেটের ময়লা আর্বজনা জমে র্দুগন্ধ আর কহর দরিয়া তুরাগ নদীর বিষাক্ত ময়লা যুক্ত কালো পানি ওজু, গোসল ও টয়লেটের কাজে ব্যবহার করে মুসল্লিরা ডায়রীয়া, পেটের ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়াও মুসল্লিদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিপুল পরিমান যানবাহন থাকা সত্বেও পরিবহন মালিকদের বেধেঁ দেয়া অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ফলে মুসল্লিদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। মহিলা মুসল্লিদের মোনাজাতে অংশ নিতে গিয়ে জায়গার অভাবে এলোপাথারী পুরুষ মুসল্লিদের সাথে বসেই অনেক কষ্ট করে মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা গেছে। এছাড়াও নিউ মন্নূ ফাইন কটন মিলসসহ নিউ অলিম্পিয়া টেক্রটাইল মিলস, আশরাফ টেক্্রটাইল মিলস, আনন্দ গ্রুপ কর্তৃপক্ষের জেরিন টেক্্রটাইল মিলস, হোন্ডা রোড এলাকা, ভরান মাজার বস্তি এলাকা, হোন্ড রোড, কামারপাড়া মাঠসহ একাধিক এলাকায় লাখ লাখ টাকা (ইজারার) মাধ্যমে ডাক নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মধ্যে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নিয়ে (ফেরত অযোগ্য) প্রতিটি দোকান ঘর ১০ দিনের জন্য ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র অথচ সাধারণ ব্যবসায়ীদের কোন নিরাপত্তা দিতে পারছে না বলে একাধিক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়াও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নামধারী কতিপয় নেতাকর্মী, চিহ্নিত চাদাঁবাজ, প্রতিদিন উৎকোচ আদায় করায় ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় মুসল্লিদের একটা অতিরিক্ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এমন কি ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আর বিশ্ব ইজতেমায় এসে ব্যবসা করা যাবে না। এমনিতেই ব্যবসা মন্দা তার উপর চাঁদাবাজদের অত্যাচারে ব্যবসা করা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে টঙ্গীসহ আশ-পাশের এলাকা গুলোতে হোটেল, রেস্তোরা গুলো প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমার সময় কৌশলে অধিক মোনাফা আয়ের উদ্দেশ্যে পচা-বাসি খাবার বিক্রি করায় মুসল্লিরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় আসা একাধিক মুসল্লিরা জানান, দুই পর্বে অনুষ্টিত বিশ্ব ইজতেমা অনেকটা শান্তিপূর্ন ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। সুশৃংখল হবে বলে মুসল্লিসহ ইজতেমা আয়োজকদের ধারণা।
আইন শৃংখলা বাহিনীর দৃষ্টি নন্দন কঠোর নিরাপত্তা আর স্থানীয় প্রশাসনের অক্লান্ত পরিশ্রমসহ স্থানীয় সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহযোগীতায় কারনে এবার বিশ্ব ইজতেমা ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকা পরিস্কার পরিছন্নতাসহ টঙ্গীর রাস্তাঘাট ছিলো যানজট মুক্ত এবং বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবারের চেয়ে শতকরা ৭৫%ভাগ সুশৃংখল অবস্থায় সর্ম্পন্ন হয়েছে।
এবারের দুই পর্বে অনুষ্টিতব্য বিশ্ব ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের মধ্যে সড়ক দূর্ঘটনায় ২ মুসল্লিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন জেলার মোট ১১ জন মুসল্লি ইন্তেকাল করেছেন এবং এবছর প্রথম পর্বে ইজতেমা ময়দানে ১২০ জোড়া মেয়ে ছেলে যৌতুক বিহীন বিবাহ অনুষ্টিত হয়েছে।
এদিকে ইজতেমা ময়দানের ২৫ একর জমি স্থানীয় বিভিন্ন মিল-কলকারখানা দখল করে নেয়ায় দেশী-বিদেশী মুসল্লিরা অবিলম্বে উক্ত জমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদের দাবী জানান।