শিরোনাম

সাংবাদিকতার পরিচয়ে চৌরাস্তায় একটি চক্র নানা অপরাধে সক্রিয় : নেতৃত্বে শামীম ও হালিম ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়েছে কর্তৃপক্ষ টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ বৃক্ষরোপন, নামাজের ঘর ও কমনরুম উদ্বোধন গাজীপুরে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড উন্মোচিত হয়নি কালীগঞ্জে সাবেক এমপি পুত্র হত্যা রহস্য গাজীপুরে পুত্র হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা তাজউদ্দীন পুত্র সোহেল তাজের মনের শক্তি অনেক

কলাম

হরতাল, অবরোধের নামে দেশে চলছে বিরোধী দলের    নারকীয় তান্ডব!


॥এম. এ. ফরিদ॥ 

আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আমি আসলে বলতে চেয়েছি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ মাত্র নয় মাসের স্বশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছিল। বাঙালী জাতিকে নেতৃত্বে দিয়ে সফল হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ট নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনায় মুক্তিপাগল মানুষ মুক্তির পথ খুঁজে পায়। প্রিয় জন্মভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে ও দেশের মানুষকে পরাধীনতার জিঞ্জির থেকে মুক্তি দিতে বঙ্গবন্ধুকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। জীবনের বেশির ভাগ সময়ে তাকে জেল খাটতে হয়েছে। পরিবার পরিজনকে সময় দেয়া তো দূরের কথা তিনি তাদের খোঁজ খবর পর্যন্ত নিতে পারতেন না। সব সময় দেশের কথা চিন্তা করতেন। এ দেশের সাধারণ মানুষের মুক্তির চিন্তায় মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন বঙ্গবন্ধু। দেশ ছাড়া কোন কিছুই যেন তার মাথায় থাকতো না। তার নিজের লেখা অসমাপ্ত আতœজীবনী থেকে জানা যায়, সংগ্রাম, আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় শেখ কামাল বঙ্গবন্ধুকে চিনতে পারতো না। বঙ্গবন্ধু যখন ফরিদপুর কারাগারে ছিলেন তখন পরিবারের সকল সদস্যকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হতো। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ওই সময়ে বঙ্গবন্ধুর গলা জড়িয়ে ধরতেন। তিনি অনেক সময় গলা ধরে কেঁদে ফেলতেন। কিন্তু শেখ কামাল বঙ্গবন্ধুর দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতেন। পাঠক হয়তো ভাবছেন যে বিষয়ে আমি লিখছি তার বাইরে কেন এসব তুলে ধরছি। কারণ তো অবশ্যই রয়েছে? আমি এখানে স্পষ্ট করতে চেয়েছি যে, বঙ্গবন্ধু দেশের জন্য কি পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী একটি দল। এ দলের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতা-নেত্রীদের কথা শুনে মনে হবে তারাই এ দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এ দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়া যে ভাষায় কথা বলেন, তাতে মনে হয় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার মূল নায়ক। তিনি মাঝে মধ্যে মিডিয়ার সামনে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করে রাজনীতির ময়দানকে চাঙ্গা করতে চেয়েছেন। তারেক জিয়া ভালো করেই জানেন বঙ্গবন্ধুর সমকক্ষ কোনো নেতা নেই। তবুও তিনি তার নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে এবং রাজনীতির ময়দানে তার অবস্থানকে জানান দিতে বিদেশের মাটিতে থেকে উদ্ভট বক্তব্যের অপলাপ ঘটিয়ে থাকেন। এ জন্য তাকে খেসারত দিতে হবে। এদেশের মাটিতে তারেক জিয়ার মতো দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকের বিচার হবেই হবে। হয়তো কিছুটা সময় বিলম্বিত হচ্ছে। গত ৫ জানুয়ারি আমরা পালন করলাম গণতন্ত্র মুক্ত দিবস। গত বছরের এই দিনে সংবিধানকে সুরক্ষিত ও সমুন্নিত রাখার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিয়ে উল্টো নির্বাচনকে বাধা গ্রস্থ করার জন্য সকল অপকৌশল অবলম্বন গ্রহণ করে। তারা হরতাল, অবরোধ, গান পাউডার দিয়ে গাড়ি পোড়ানো, পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যাসহ নানা অপকর্ম করে নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করে। এদেশের মানুষ তাদের সকল অপকৌশলকে দুপায়ে মাড়িয়ে বর্তমান সরকারকে ৩য় বারের মতো ক্ষমতায় বসায়। দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এটি একটি বিশাল মাইল ফলক। এদেশের মানুষ অনেক সচেতন। তাই তারা বুঝতে পেরেছে সরকার পরিবর্তন হলে উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়। আমরা পিছিয়ে পড়ি। তাই এবার তারা আর কোনো ভুল করেনি। বর্তমান সরকার সকল ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে। সবচেয়ে বড় সফলতা হচ্ছে বছরের ১ম দিনেই বাচ্চাদের হাতে নতুন বই পৌছে দেয়া। অন্য সাফল্যগুলোর বিষয়ে সকলেই জানেন। সেগুলো লিখে পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। বিএনপি একটি লুটপাটের দল। বিএনপি রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার একটি দল। বিএনপির বেশির ভাগ নেতারা দুর্নীতির দায়ে দোষী প্রমাণিত। দলটি জঙ্গীবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দেশকে একটি জঙ্গী রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের মানচিত্রে পরিচয় করে দিয়েছিল। এরা এখন আবার জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। গত ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আবার হরতাল, অবরোধ কর্মসূচী দিয়েছে। মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করাসহ গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রাজশাহীতে আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে। মোট কথা সারা দেশে নাশকতা সৃষ্টি করে দেশকে আবারও গত বছরের ৫ জানুয়ারির পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের বলিষ্ট পদক্ষেপের কারণে তারা সেটা করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। বিএনপি কর্মসূচী ডেকে ঘরে বসে থাকে। আর তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী নাশকতার মাধ্যমে কর্মসূচী বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালায়। আসলে কয়লা ধুলে, ময়লা যায় না। বিএনপি জন্ম হয়েছে সন্ত্রাসী কায়দায়। এরা যখন ক্ষমতায় থাকে তখন জঙ্গীবাদ, হত্যা, খুন, ঘুুমের ঘটনা বেড়ে যায়। আমি বিএনপি নেত্রীকে অনুরোধ জানাবো, আপনি এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা আমরা অস্বীকার করতে পারবো না। তাই বলছি, নাশকতার পথ পরিহার করে এ দেশের মানুষের ভালোবাসা আদায়ের চেষ্টা করুণ। পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার দিন শেষ হয়ে গেছে। মানুষকে কষ্ট না দিয়ে সঠিক রাজনীতি করুণ। নিজেকে নিজে অবরুদ্ধ না করে বাসায় চলে যান। অবরুদ্ধ নাটক যথেষ্ট হয়েছে। এবার নাটকের যবনিকা টানুন। আপনার সামান্য সুখের জন্য আমাদের মতো অসহায় সাধারণ মানুষকে কেন কষ্ট দিচ্ছেন। সামনে বিশ্ব ইজতেমা। লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমায় যোগ দেয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসবেন। তাই অবরোধ প্রত্যাহার করে দ্বীনের রাস্তায় কিছুটা সময় দিন। আল্লাহ আপনাকে হেফাজত করবেন।